কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় নবান্ন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। স্বপ্ন ও সাধনার আমন ধান উঠছে কৃষকের ঘরে। আবহমান গ্রাম বাংলায় নবান্ন বাঙ্গালির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। নবগঠিত এ উপজেলার আওতাধীন পাঁচটি ইউনিয়ন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে প্রস্তুতি চলছে নবান্নের। নতুন চালের মুহ মুহ গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠবে পাড়া মহল্লা। এবছর আমন ধানের ফলন ভালো হওয়াতে কৃষকদের ঘরে ঘরে খুশির আমেজ। গ্রামে ফিরে এসেছে নবান্নের এক অন্যন্য অনুভূতি।
নতুন চাল পিষিয়ে হরেক রকমের পিঠা তৈরিতে মেতে উঠবে বৌ-ঝিয়েরা। মেয়ের জামাইসহ নানা আত্মীয়স্বজনদের শীত পিঠার দাওয়াত দেয়া হয়। নতুন চালের পিঠা, পায়েস দিয়ে ধুমধামে ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়। গ্রামের বধুরা অপেক্ষা করেন বাপের বাড়িতে নাইওরে (বেড়াতে) যাওয়ার জন্য। পিঠা পায়েস আর নতুন চালের ভাতের সুগন্ধে ভরে উঠবে মন। প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে চলতি মৌসুমী শীত পিঠার আয়োজন করা হয়।
ফসলের মাঠ থেকে প্রায় সোনালী ধান কর্তন শেষ হচ্ছে। বাকি ফসল ঘরে তুলতে কৃষক-কৃষাণীরা কোমর বেঁধে কাজ করছেন। কেউ ধান কাটছেন, আবার কেউ তা বাড়িতে নিয়ে রাখছেন। সবাই ব্যস্তমুখর হয়ে পড়েন ধানকাটা নিয়ে। যারা পূর্বে ধান কেটেছেন তারা মাড়াই পরবর্তী শুকানোর কাজও শেষ বললে চলে। এখন নতুন ধানের চাল পিষানোর পালা। প্রস্তুতিও নিচ্ছেন নবান্নের নানা পিঠা পুলি তৈরি করণের।
নবান্ন শব্দের অর্থ “নতুন অন্ন”। নবান্ন হচ্ছে হেমন্তের প্রাণ। নতুন ধান থেকে তৈরি হবে পিঠা পায়েস, ক্ষীরসহ নানা রকম খাবারে মুখরিত হয়ে উঠবে পাড়া মহল্লা। নতুন ধান থেকে পাওয়া চালে হবে নবান্ন উৎসব। ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসবের আয়োজনের অপেক্ষা মাত্র। নবান্ন বরণে বাড়ীঘরের বৌ-ঝিয়েরা সময় পার করছেন।
আলমসহ কজন কৃষকের সাথে কথা হলে তারা জানান, সোনালী আমন ধান কাটা, মাড়াইয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিছুদিন পরপরই নতুন ধানের চালের মুহ মুহ গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠবে গ্রামাঞ্চলের বাড়িঘর। এবার ঘরের বধুরা শীতকালের অন্যতম ভাপা পিঠাসহ নানাজাতের পিঠাপুলি বানাবে। সে অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন।
আসমাসহ দুয়েক বধুরা জানান, শীত একটু ঘনিয়ে পড়লেই চলতি মৌসুমে নবান্নের নতুন চালে শীত পিঠা বানানোর হিড়িক পড়বে বাড়ীঘরে। গুড় আর নারকেলসহ নানা উপকরন জোগাড় করতেও হিমশিম খাচ্ছেন পরিবারের নারীরা।
নবান্ন টিভি/ এম আবু হেনা সাগর