1. aoroni@nobanno.com : AORONI AKTER : AORONI AKTER
  2. aporna@gmail.com : Aporna Halder : Aporna Halder
  3. admin@hostitbd.xyz : hostitbd :
  4. admin@nobannotv.com : NobannoTV : admin Nobannotv
জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব অনেক বেশি — Nobanno TV
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:১২ অপরাহ্ন

জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব অনেক বেশি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৭০ বার পঠিত

ঈমান আনার পর মহান আল্লাহর সবচেয়ে বড় বিধান নামাজ। নামাজ এমন এক বিধান যা কখনো মাফ হয় না। অসুস্থ হলেও নামাজ পড়তে হয়। অসুস্থ হয়ে দাঁড়াতে না পারলে বসে নামাজ পড়বে। বসে পড়তে না পারলে শুয়ে নামাজ পড়বে। শুয়ে পড়তে না পারলে ইশারার মাধ্যমে হলেও নামাজ পড়বে। নামাজ পড়তেই হবে।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার নামাজের হিসাব নেয়া হবে। নামাজের হিসাব সঠিক হলে সকল ইবাদত সঠিক হবে। আর নামাজ বিনষ্ট হলে সব ইবাদত বিনষ্ট হবে।’ (তবারানি, মুজামুল আওসাত, হাদিস: ১৮৫৯)

পবিত্র কোরআনে নামাজের আলোচনা

পবিত্র কোরআনে জামাতে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে-

মহান আল্লাহ বলেন,

وَأَقِيْمُوا الصَّلاَةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوْا مَعَ الرَّاكِعِيْنَ ‘তোমরা নামাজ কায়েম কর ও জাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু কর।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৪৩)।

উপর্যুক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ ‘রুকু’ দ্বারা নামাজ বুঝিয়েছেন। কারণ রুকু নামাজের অন্যতম প্রধান রুকন। ‘রুকুকারীদের সাথে’ এ কথা দ্বারা মহান আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন যে, রুকু একাকি হবে না। বরং রুকুকারীদের সাথে হতে হবে। আর এটি জামাতে নামাজ আদায় ছাড়া সম্ভব নয়। ইবনু কাসির (রহ.) বলেন, মহান আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মাদির রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করার নির্দেশ দিয়েছেন।

মহান আল্লাহ আরও বলেন,

وَإِذَا كُنْتَ فِيْهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوْا أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوْا فَلْيَكُوْنُوْا مِنْ وَرَائِكُمْ، وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَى لَمْ يُصَلُّوْا فَلْيُصَلُّوْا مَعَك ‘আর যখন তুমি (কোন অভিযানে) তাদের সাথে থাকবে এবং জামাতে ইমামতি করবে, তখন তোমার সঙ্গে তাদের একদল দাঁড়াবে এবং অন্যদল অস্ত্র ধারণ করবে। অতঃপর নামাজ শেষে তারা যেন তোমার পিছন থেকে সরে যায় এবং যারা নামাজ পড়েনি তারা চলে আসে ও তোমার সঙ্গে নামাজ আদায় করে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১০২)

ইবনুল মুনযির (রহ.) বলেন, উপর্যুক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ তার নবীকে ভয়ের (যুদ্ধচলাকালীন) নামাজকে জামাতের সঙ্গে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। এতে কোনো ছাড় দেয়া হয়নি। তাহলে স্বাভাবিক অবস্থায় জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। (কিতাবুল আওসাত: ৪/১৩৫)

হাদিসে জামাতে নামাজ আদায়ের আলোচনা

জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে হাদিসে বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। নীচে কয়েকটি হাদিস তুলে ধরা হলো- জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ে নিফাক থেকে পরিত্রাণ এবং জাহান্নাম খেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, যে ব্যক্তি একাধারে চল্লিশ দিন পর্যন্ত প্রথম তকবিরের সাথে জামায়াতে সালাতে আদায় করে, তার জন্য দুটি মুক্তি রয়েছে- জাহান্নাম থেকে মুক্তি আর নিফাক থেকে মুক্তি। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২২৪)

জামাতে নামাজ আদায়কারী মহান আল্লাহর হেফাজতে থাকেন। হযরত উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তি মহান আল্লাহর জিম্মায়, তার মধ্যে মসজিদে গমনকারী ব্যক্তি। সে আল্লাহর জিম্মায় থাকে ; এমনকি তার মৃত্যু হলে তাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। অথবা তাকে সওয়াব বা গনিমত প্রদান করে (বাড়িতে) ফিরিয়ে দিবেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ২১৩৩)

মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ে অধিক সওয়াব। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় ঘরে বা বাজারের নামাজের চেয়ে ২৫ গুণ বেশি সওয়াবের অধিকারী বানায়। আর এটা এভাবে যে, যখন সে অজু করে খুব সুন্দর করে । এবং (নামাজের জন্য) মসজিদের উদ্দেশে বের হয়।

এ অবস্থায় সে যতবার পা ফেলে, প্রতিবারের পরিবর্তে একটি করে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি করে গুনাহ ক্ষমা করা হয়। তারপর যখন সে নামাজ আদায় করতে থাকে, ফেরেশতাগণ তার জন্য রহমতের দোয়া করতে থাকেন। যতক্ষণ সে নামাজের জায়গায় বসে থাকে ফেরেশতারা তার জন্য এই বলে দোয়া করেন, হে আল্লাহ! এই ব্যক্তির ওপর রহমত নাজিল করুন। হে আল্লাহ! এর ওপর দয়া করুন। আর যতক্ষণ সে নামাজের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে, ততক্ষণ সে নামাজের অর্ন্তভুক্ত থাকে।’ (বুখারি ও মুসলিম, হাদিস : ৬১১)

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সাত ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ ছায়া দান করবেন ওই দিন, যেদিন মহান আল্লাহর ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। তাদের মধ্যে একজন হল ঐ ব্যক্তি যার হৃদয় মসজিদের সাথে লাগানো। (বুখারি ও মুসলিম, হাদিস : ৬২০)

হযরত ইবনু উম্মে মাকতুম (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে মুসল্লি কম দেখে বললেন, আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি লোকদের জন্য কাউকে ইমাম নিযুক্ত করে বেরিয়ে যাই। অতঃপর যে জামাতে নামাজ আদায় না করে বাড়িতে অবস্থান করছে তাকে জ্বালিয়ে দেই। তখন ইবনু উম্মে মাকতুম (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার বাড়ি ও মসজিদের মধ্যে খেজুর ও বিভিন্ন গাছের বাগান আছে।

সবসময় আমি এমন কাউকেও পাই না যে আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসবে। আমাকে কি বাড়িতে নামাজ আদায়ের সুযোগ দেয়া যায়? তিনি বললেন, তুমি কি ইকামত শুনতে পাও? সে বলল, হ্যাঁ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে নামাজে এসো।’। (আহমাদ, হাদিস: ১৫৫৩০)

অন্য বর্ণনায় আছে, ইবনু উম্মে মাকতুম বাড়িতে নামাজ আদায়ের অনুমতি চাইলে তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। অতঃপর সে যখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডেকে বললেন, তুমি কি আজান শুনতে পাও? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে নামাজে এসো।’ (মুসলিম, হাদিস: ৬৫৩)

হযরত উসামা বিন যায়েদ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘লোকেরা অবশ্যই জামাতে নামাজ আদায় ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকবে, অন্যথা আমি তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিব।’ (ইবনু মাজাহ, হাদিস:৭৯৫)

অপর বর্ণনায় এসেছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘লোকেরা অবশ্যই জামাতে নামাজ আদায় ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকবে, অন্যথা মহান আল্লাহ তাদের অন্তরসমূহে মোহর মেরে দিবেন। ফলে তারা গাফেলদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৮৬৫)

সালাফদের জামাতের জন্য অধীর আগ্রহ

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজের প্রতি অত্যন্ত যত্নবান ছিলেন। স্বাভাবিক-অস্বাভাবিক, যুদ্ধ-শান্তি, সুস্থ-অসুস্থ সব অবস্থায় নামাজের গুরুত্ব দিয়েছেন। মৃত্যব্যাধিতে আক্রান্ত অবস্থায়ও তিনি নামাজ আদায়ে অবহেলা করেননি বিন্দুমাত্র। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবিগণ ও পরবর্তীতে তাবেঈন ও উত্তম পূর্বপুরুষগণ নামাজের প্রতি ছিলেন একনিষ্ঠ।

ইদানীং নামাজ আদায়ে উদাসীন অনেকেই। জুমার নামাজে মসজিদে উপচে-পড়া ভিড় হচ্ছে ঠিকই- তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মুসুল্লিশূন্য থাকে মসজিদ। পূর্ববর্তী বুজুর্গরা জামাতের সঙ্গে নামজ আদায়ের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত যত্নবান। পৃথিবীর সব সম্পদ হারিয়ে গেলেও তারা এতোটা ব্যথিত হতেন না- যতটা ব্যথিত হতেন এক ওয়াক্ত নামাজের জামাত ছুটে গেলে।

মুহাম্মদ বিন মোবারক আসম (রহ.) বলেন, ‘আমি জামাতে নামাজ আদায়ে সক্ষম না হওয়ায় শুধু আবু ইসহাক আল-বুখারীই সমবেদনা জানান। আর আমার বাবা মারা যেত, তাহলে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ আমাকে সমবেদনা জানাত। কেননা ধর্ম পালন করতে গিয়ে কষ্ট শিকার, তাদের নিকট দুনিয়ার মসিবতের চেয়েও সহজ মনে হত।

মায়মুন বিন মেহরান (রহ.) মসজিদে এলে তাকে বলা হল, সব লোক চলে গেছে। তিনি বললেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। এই নামাজের মর্যাদা আমার নিকট ইরাকের গভর্নর হওয়ার চেয়েও অধিক প্রিয়।

ইউনুস বিন আব্দুল্লাহ (রহ.) বলেন,

আমার যদি মুরগী হারিয়ে যায়, তবে আমি তার জন্য চিন্তিত হই, অথচ নামাজ ছুটে গেলে তার জন্য চিন্তিত হই না! আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে যাবার জন্য প্রতিযোগিতা করতেন। ইমামের সাথে প্রথম তাকবিরে উপস্থিত হবার জন্য তারা সকলে ছিলেন প্রচণ্ড আগ্রহী।

সাঈদ বিন মুসায়্যিব (রহ.) বলেন, ৫০ বছর ধরে আমার প্রথম তাকবির ছুটেনি। ৫০ বছর পর্যন্ত আমি ফরজ নামাজে মানুষের ঘাড় দেখিনি। অর্থাৎ তিনি পঞ্চাশ বছর ধরে প্রথম কাতারেই নামাজ পড়েছেন। ওয়াকি বিন জারাহ (রহ.) বলেন, প্রায় ৭০ বছর পর্যস্ত আমাশ (রহ.)-এর প্রথম তাকবির ছুটেনি।

জামাতে নামাজ আদায়ে পারস্পরিক আন্তরিকতা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। মুসলমানগণ দিন ও রাতে পাঁচবার পরস্পর মিলিত হয়। তাদের মাঝে সালাম বিনিময় হয়। একে অপরের খোঁজ-খবর নেয়। হাসিমুখে একে অন্যের সাথে সাক্ষাত করে। এসব বিষয় পারস্পরিক ভালোবাসা এবং একে অপরের কাছাকাছি আসার সুযোগ করে দেয়।

নবান্ন টিভি

 

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই রকম আরো কিছু জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2023 nobannotv.com
Design & Development By Hostitbd.Com