বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর একটি চীন। যেখানে দিন দিন বেড়ে চলেছে তাপমাত্রা। গত ৬০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে চীনের সর্বোচ্চ উষ্ণতম বছরের রেকর্ড গড়েছে ২০২৪ সাল।
আবহাওয়া দফতর বলছে, উষ্ণতম আবহাওয়ার কারণে ২০২৪ সালে বেড়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। জানমালেরও ক্ষতি হয়েছে অনেক। বিমা সংস্থা সুইস রে’র তথ্যমতে, শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগে গতবছর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩১ হাজার কোটি ডলার।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী দিন দিন বাড়ছে তাপমাত্রা। এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস একটি। বিশ্বে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে চীন।
সম্প্রতি চীনের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ছিল ২০২৪ সাল। গত ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রেকর্ড তাপমাত্রার মধ্যে যা ছিল সর্বোচ্চ। এছাড়া ১৯৬১ সাল থেকে হওয়া রেকর্ড অনুযায়ী উষ্ণতম চারটি বছর ছিল গত চার বছর। যার দশটি বছরের সবকটিই ছিল একুশ শতকে।
চীনে উষ্ণতম বছরের পূর্ণাঙ্গ রেকর্ড শুরু হয় ১৯৬১ সাল থেকে। যেখানে দেখা যায়, সর্বোচ্চ উষ্ণতম বছর ২০২৪ সালে দেশটির গড় তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৯২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১ দশমিক শূন্য ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
চীনের অর্থনৈতিক কেন্দ্র ও সর্বাধিক জনবহুল শহর সাংহাইতেও সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ছিল ২০২৪ সাল। গত বছর শহরটির গড় তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ১৮৭৩ সাল থেকে শুরু হওয়া রেকর্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া ২০২৪ সালে দীর্ঘতম গ্রীষ্মকালের মুখোমুখি হয়েছে দেশটির গুয়াংঝু শহর। যেখানে ২৪০ দিন গড়তাপমাত্রা ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চীনের এই উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে গত বছর শক্তিশালী ঝড় এবং উচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফলে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। পাশাপাশি সারাদেশে বন্যার কারণে হাজার হাজার বাসিন্দা বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়। আবার গ্রীষ্মের শেষদিকে তীব্র গরম ও খরার মুখোমুখি হয়েছিল সিচুয়ান, চংকিং এবং ইয়াংজি নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল।
জুরিখ-ভিত্তিক বিমা সংস্থা সুইস রে-এর তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে জলবায়ু-সম্পর্কিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩১ হাজার বিলিয়ন ডলার।