অ্যাডলফ হিটলারের জন্মভিটা পরিণত হতে পারে ‘নব্য নাৎসিদের’ আরাধ্য স্থানে- এমন শঙ্কায় সেটিকে থানায় রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রিয়া সরকার।
সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হলেও, নতুন করে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
কারণ এক নথি থেকে জানা ছেগে, হিটলারের ইচ্ছা ছিল তার জন্মভিটা স্থানীয় জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে রূপান্তর হোক।
ফলে কেউ কেউ বলছে, এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করলে আদতে হিটলারের ইচ্ছাই পূরণ করা হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, হিটলারের জন্মভিটা ব্যক্তিমালিকানা থেকে ২০১৬ সালে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিতে দীর্ঘ আইনি লড়াই চালিয়েছে অস্ট্রিয়া সরকার।
স্থানটিতে থাকা কৌণিক আকারের ওই ভবনকে থানা ও পুলিশের জন্য ‘মানবাধিকারবিষয়ক প্রশিক্ষণাগারে’ রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আর এ জন্য ব্যয় হতে পারে দুই কোটি ইউরোর মতো।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২ অক্টোবর ভবনের পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হবে, যা শেষ হতে পারে ২০২৫ সালে।
আর ২০২৬ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশ স্টেশন হিসেবে চালু হওয়ার কথা।
এদিকে, হিটলারের জন্মভিটার ওপর চলতি মাসের শেষের দিকে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করার কথা জানিয়েছেন অস্ট্রিয়ার খ্যাতনামা চলচ্চিত্রকার গুইনটা শোআইগা।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অস্ট্রিয়া সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন,
‘১৯৩৯ সালের ১০ মে প্রকাশিত স্থানীয় একটি পত্রিকার নিবন্ধে দেখা যায়, হিটলার ইচ্ছা পোষণ করে গেছেন যেন তার আঁতুড়ঘর (জন্মভিটা) জেলা প্রশাসনের কার্যালয় হয়।
থানা ভবন হিসেবে স্থানটি ব্যবহৃত হলে আদতে হিটলারের মনোবাসনাই পূরণ করা হবে।’
সমালোচনা হলেও নকশা অনুযায়ী নতুন ভবনের কাজ এগিয়ে নেয়ার কথা জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
১৮৮৯ সালে অস্ট্রিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় ব্রাউনাউ শহরের ওই বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন হিটলার।
ভবনটির মালিক গার্লিন্ড পোমারের কাছ থেকে ১৯৭২ সালে অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল।
তিনতলা এ বাড়িটি ২০১১ সাল থেকে খালি ছিল। ২০১৬ সালে মন্ত্রণালয় বাড়িটি ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেয়।
তবে ইতিহাসবিদ ও রাজনীতিকদের তীব্র সমালোচনার মুখে সরকার বাড়িটি শেষ পর্যন্ত ভাঙতে পারেনি।
পরে ‘বিশেষ আইনি অনুমোদন’ নেয়ার পরে ভবনটি পোমারের কাছে থেকে অধিগ্রহণ করে নেয় অস্ট্রিয়া সরকার।