কাঁঠাল উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থান বাংলাদেশের। বছরে যে পরিমাণ কাঁঠাল বাংলাদেশে উৎপন্ন হয়, তার প্রায় অর্ধেকটাই নষ্ট হয়ে যায়।
যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু এবার সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার দিকে যাত্রা শুরু করছে এই কৃষি পণ্যটি।
আইসল্যান্ড থেকে এরইমধ্যে ৪ লাখ পিস কাঁঠালের বার্গারের ক্রয়াদেশ পেয়েছে বাংলাদেশ।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) কর্মকর্তাদের বরাতে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্টান্ডার্ড।
কাঁঠালের তৈরি পণ্যের বাজার বিস্তারে কাজ করছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তাও মিলেছে।
সংস্থাটি তার কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ এবং উদ্যোগ প্রচার প্রকল্পের অধীনে ১২৯ মিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করছে।
জাতিসংঘের এজেন্সি-সহায়তা প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়িত হওয়া ছোট আকারের প্রকল্পগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের কাঁঠালের বার্গার অন্যতম।
১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন অ্যান্ড প্র্যাকটিস (সিডিআইপি) নামের এনজিও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
এনজিওটি বিনিয়োগ পেয়েছে ১.৮৯ কোটি টাকা; এরমধ্যে পিকেএসএফ ১.৪৪ কোটি টাকা এবং সিডিআইপি বাকি অর্থ প্রদান করেছে।
সিডিআইপির নির্বাহী পরিচালক মিফতা নাইম হুদা সংবাদমাধ্যম টিবিএসকে বলেন,
“কাঁঠালের বার্গার উৎপাদন কারখানায় পিকেএসফ শুধু অর্থায়নই করছে না, আইসল্যান্ড থেকে যে রফতানি অর্ডার এসেছে,
তাতেও পিকেএসএস সহায়তা করছে। আইসল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানটি পিকেএসএফর মাধ্যমে কারখানা পরিদর্শন করতে চেয়েছে।
সিডিআইপি বিষয়টি মাথায় নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
বার্গারে পেটিতে ব্যবহৃত মাংসের বিকল্প উপকরণ কাঁঠাল ব্যবহার করে বার্গার তৈরি করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ডইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (বিসিএসআইআর)-এ এর খাদ্যমান যাচাই করা হয়েছে।
বিসিএসআইআর থেকে ডায়েটারি ফাইবার অ্যানালাইজারের মাধ্যমে পরীক্ষায় প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালের পেটিতে ৯.৭৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,
১০.৮৭ গ্রাম প্রোটিন, ৮.৪৭ গ্রাম ফ্যাট, ১৯.৩২ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার এবং ১৫৯ কিলোক্যালরি এনার্জি রয়েছে।
এ বিষয়ে পিকেএসএফের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, স্বাদ, গন্ধ কিংবা রসালোভাবের দিক দিয়ে
মাংসের পেটির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কাঁঠালের পেটি। সারাবিশ্বে ভেজিটেরিয়ানদের (নিরামিষভোজী) কাছে এর চাহিদা থাকার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে,
ফলে রফতানিতেও তৈরি হয়েছে সম্ভাবনা।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরীও একই মতামত ব্যক্ত করেন।