খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশের অভ্যন্তরীণ ইউরিয়া সারের চাহিদা মেটানো এবং সুলভমূল্যে কৃষকদের কাছে সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে নরসিংদীর পলাশে বাস্তবায়নাধীন ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার কমিশনিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রধান অতিথি হিসেবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
আগামী অক্টোবরের শেষদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারখানাটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
এর আগে ২০১৮ সালের অক্টোবরে নরসিংদী জেলায় ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার কার্যক্রম শুরু হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ধরা হয় ৯.২৪ লাখ মেট্রিক টন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিদেশি কোম্পানিকে বেঁধে দেয়া সময়ের আগেই শেষ হচ্ছে ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার সার্বিক কাজ।
চলতি মাসেই পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাবে পরিবেশবান্ধব এই সার কারখানাটি।
তিনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন সার সরবরাহ নিশ্চিত করে শিল্প মন্ত্রণালয় কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট রয়েছে।
সার কারখানা পর্যায়ে উৎপাদন যাতে কোনো অবস্থায় ব্যাহত না হয়, সে লক্ষ্যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
সার কারখানার উৎপাদন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়ার লক্ষ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের প্রশাসনিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।
একই সঙ্গে কারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কারিগরি জনবলের প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন জনবল নিয়োগ করা হবে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্প’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ সার কারখানা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিরাট ভূমিকা রাখবে।
নতুন সার কারখানাটি স্থাপিত হলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি সার আমদানির ওপর নির্ভরতা হ্রাস পাবে,
কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বৃদ্ধি পাবে এবং দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
‘ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্প’-এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
প্রকল্পের বিভিন্ন প্ল্যান্টের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের অ্যামোনিয়া প্ল্যান্ট, ইউরিয়া প্ল্যান্ট এবং ইউটিলিটি দৃশ্যমান।
এ ছাড়া পিডিবি থেকে পাওয়ার রিসিভিং, ইমার্জেন্সি ডিজেল জেনারেটরের লোড টেন্ট সম্পন্ন হয়েছে, কুলিং ওয়াটার সিস্টেমে ওয়াটার ফ্ল্যাশিং ও কেমিক্যাল ক্লিনিং,
নাইট্রোজেন ইউনিটের Instrument Air Compressor-এর প্রি-কমিশনিং এবং কমিশনিং শেষ হয়েছে।
ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার কমিশনিং কার্যক্রম উদ্বোধনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি,
স্থানীয় এমপি ড. আনোয়ারুল আশরাফ খান, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা,
বিসিআইসি-এর চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এসএম আলম উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া প্রকল্প পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিক এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।