যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো সাফল্যের সঙ্গে গর্ভ প্রতিস্থাপন করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে দেশটির একদল চিকিৎসক।
জন্মের পর থেকে বিরল রোগে আক্রান্ত ছিলেন ছোট বোন, যার বয়স ৩৪। গর্ভধারণের ক্ষমতা ছিল না তার।
সন্তান ধারণের জন্য তাই ৪০ বছর বয়সী বড় বোনের গর্ভ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তার শরীরে।
বিরল অস্ত্রপোচারের মাধ্যমে এই গর্ভ প্রতিস্থাপনে সাফল্য অর্জন করেছেন ব্রিটিশ চিকিৎসক।
যুক্তরাজ্যে এ ধরনের অস্ত্রোপচার এটাই প্রথম।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বিরল অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ আছেন দুই বোনই। তবে নিজেদের নাম প্রকাশ করেননি তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ জন চিকিৎসকের একটি দল প্রায় ১৭ ঘণ্টা ধরে এই অস্ত্রোপচার করেন।
অক্সফোর্ডের যে হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়েছে সেখানকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড স্মিথ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ধরনের অস্ত্রোপচার আগে যুক্তরাজ্যে কখনো হয়নি।
এটা বড় ধরনের সাফল্য। পুরো বিষয়টি আবেগময় ছিল।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পুরো গর্ভ প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়াটির নেতৃত্বে ছিলেন চিকিৎসক সার্জন ইসাবেল কুইরোগা।
এই সাফল্যকে চাঁদে অভিযানের থেকেও বেশি উৎসাহদায়ক বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
জানা গেছে, যার দেহে গর্ভ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, তিনি ‘মায়ার রোকিটানস্কি কুস্টার হাউসার সিনড্রোম (এমআরকেএইচ)’ নামে এক বিরল রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
এর ফলে তিনি গর্ভধারণের ক্ষমতা হারান। এই রোগ বিশ্বে প্রতি পাঁচ হাজার নারীর মধ্যে একজনের শরীরে দেখতে পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
তবে নতুন গর্ভ প্রতিস্থাপনে সাফল্য পাওয়ায়, এমআরকেএইচ-এর মতো রোগ থাকলেও আগামীতে নারীদের সন্তানধারণে কোনো অসুবিধা হবে না বলেই আশা চিকিৎসকদের।
আগামী সেপ্টেম্বরেও যুক্তরাজ্যে আরেক নারীর শরীরে গর্ভ প্রতিস্থাপনের কথা রয়েছে এবং আরও অনেকেই এই তালিকায় রয়েছে বলে বলে জানা গেছে।
তবে তালিকায় থাকা সব নারী ওই ৩৪ বছরের নারীর মতো বিরল রোগে আক্রান্ত কি না, তা জানা যায়নি।
শুধু যুক্তরাজ্যে নয়, গর্ভ প্রতিস্থাপনের ঘটনা ঘটেছে বিশ্বের একাধিক দেশে।
এই তালিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, সৌদি আরব, তুরস্ক, চীন, চেক প্রজাতন্ত্র, ব্রাজিল, জার্মানি, সার্বিয়া এবং ভারতের নামও।