শত প্রতিকূলতার মধ্যেও কৃষ্ণ সাগরীয় অঞ্চলের বন্দরগুলো দিয়ে পণ্য রফতানি অব্যাহত রয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে কমছে গমের দাম।
সোমবার (১৪ আগস্ট) শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে প্রতি বুশেল গমের দাম ১. ৯ শতাংশ কমে ৬.৪০ ডলারের কাছাকাছি ঠেকে।
তাছাড়া চলতি বছর গমের বাম্পার ফলন হওয়ায় শস্যটির দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম।
এদিকে,
এদিন সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় ১২ টা ১৪ মিনিটে ডিসেম্বরে সরবরাহ হতে যাওয়া গমের দাম ০.২ শতাংশ কমে বুশেল প্রতি দাঁড়িয়েছে ৬.৪০২৫ ডলার।
পাশাপশি ভুট্টা ও সয়াবিনের দামও ০.৭ শতাংশ কমেছে।
এর আগে,
বিশ্ববাজারে ইউক্রেনের শস্য সরবরাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথকে পঙ্গু করে দেয়ার প্রয়াসে গত ২৪ জুলাই ইউক্রেনের দানিয়ুব নদীর রেনি বন্দরে একটি ড্রোন আঘাত হানে।
এটিই দেশটির সবচেয়ে বড় নদীবন্দর হওয়ায় সে সময় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে গমের দাম।
ওই হামলার একদিন পর (২৫ জুলাই) শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে প্রতি বুশেল গমের দাম ২.২ শতাংশ বেড়ে ৭.৭৭২৫ ডলারে পৌঁছে যায়।
এটা ছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার একটি তেল ট্যাংকারে ইউক্রেনের আক্রমণের জেরে ধরেই সম্প্রতি রুশ নৌ বাহিনী কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের একটি পণ্যবাহী জাহাজ পরীক্ষা করার জন্য গুলি চালায়।
ফলে এ অঞ্চল দিয়ে পণ্য পরিবহনে প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
তবে উভয় দেশের মধ্যে চলতে থাকা এ সংঘাত এবং এ অঞ্চল দিয়ে পণ্য পরিবহনে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও রাবোব্যাংক জানিয়েছে,
ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয় দেশ থেকেই পণ্য রফতানি অব্যাহত রয়েছে।
গত শুক্রবার (১১ আগস্ট) ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ২০২৩-’২৪ মৌসুমে রাশিয়া ৪৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন গম রফতানি করবে।
অর্থাৎ বর্তমানে বিশ্বের মোট গম রফতানির প্রায় এক চতুর্থাংশই সরবরাহ হবে রাশিয়া থেকে।
এর আগে,
ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত শুরুর পর গত বছরের মাঝামাঝিতে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে নিরাপদে শস্য রফতানির জন্য কৃষ্ণ সাগর চুক্তি হয়।
তিন দফায় বাড়ানোর পর গত ১৭ জুলাই এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়।
আর রাশিয়া রাজি না হওয়ায় এ চুক্তি নবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
জাতিসংঘের তথ্যানুসারে,
এ পর্যন্ত এ চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে প্রায় ৩৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন খাদ্য রফতানি করা গেছে।
অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের তথ্য বলছে,
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর আগে ইউক্রেন বিশ্বের ৫ম শীর্ষ গম রফতানিকারক ছিল।
বিশ্বব্যাপী মোট গম রফতানির ১০ শতাংশই ছিল দেশটির দখলে।