1. aoroni@nobanno.com : AORONI AKTER : AORONI AKTER
  2. aporna@gmail.com : Aporna Halder : Aporna Halder
  3. admin@hostitbd.xyz : hostitbd :
  4. admin@nobannotv.com : nobannotv.com : Nobannotv com
ফসলী জমিতে ইটভাটা “কালো ধোঁয়ার প্রভাব পড়ছে জনজীবন ও কৃষিতে” — Nobanno TV
বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:০৫ অপরাহ্ন

ফসলী জমিতে ইটভাটা “কালো ধোঁয়ার প্রভাব পড়ছে জনজীবন ও কৃষিতে”

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত

পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ ইটভাটাগুলো যাতে কার্যক্রম শুরু না করতে পারে সেজন্য হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা দেয়া হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে তা বাস্তবায়ন হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায় উপেক্ষিত হাইকোর্টের নির্দেশনা। এই জেলায় চলতি মৌসুমে দেড় শতাধিক অবৈধ ইটভাটায় ইট তৈরির কার্যক্রম চলছে। যেখানে ব্যবহার হচ্ছে কৃষি জমি ও নদীতীরের মাটি। অবৈধ ইটভাটাগুলো ধীরে ধীরে ধ্বংস করছে বেঁচে থাকার পরিবেশ।

ইটভাটার চিমনি দিয়ে বের হওয়া কালো ধোঁয়ার প্রভাব পড়ছে জনজীবনসহ গাছ ও কৃষিতে। তথ্যমতে, অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ইট উৎপাদন ও ভাটা পরিচালনার মৌসুম। এই সময়ের মধ্যে লাইসেন্সবিহীন অসংখ্য অবৈধ ইটভাটা তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ইটভাটা মালিক সমিতির জানায়, জেলায় ১৫৮টি ইটভাটায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩টি জিকজ্যাক ও ৯৫টি চলছে খড়ির ভাটা।

জানা গেছে, চলতি বছরের ২৮শে নভেম্বর দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা অবৈধ ইটভাটাগুলো যাতে কার্যক্রম শুরু না করতে পারে, সেজন্য ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিভাগীয় কমিশনারদের পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবি এর এক রিট আবেদনের নির্দেশনার আলোকে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। বিভাগীয় কমিশনারগণকে নিজ নিজ এলাকার অবৈধ ইটভাটার মালিকরা যাতে তাদের কার্যক্রম শুরু না করতে পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং ওই কার্যক্রম সম্পর্কে ১৫ই ডিসেম্বরের আগে তাদের পদক্ষেপ সম্পর্কে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন উচ্চ আদালতের সেই আদেশ বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে চলতি মৌসুমেও কার্যক্রম শুরু করেছে পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ সব ইটভাটা।

সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, উচ্চ আদালতের রায় বা আদেশ কার্যকর করার দায়িত্ব সরকারের। এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত সকল নির্বাহী ও বিচারবিভাগীয় কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টকে সহায়তা করবে। এছাড়াও আইন অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়া ইটভাটা স্থাপন, পরিচালনা কিংবা চালু করা যাবে না। তবে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের অধীনে ইস্যু করা পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটার লাইসেন্সের জন্য কোনো আবেদন করা যাবে না। আবাসিক, সংরক্ষিত ও বাণিজ্যিক এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর ও কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশপাশ ঘুরে বসতবাড়ির খুব কাছে ও কৃষি জমিতে অনেক ইটভাটা দেখা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের অবৈধ ইটভাটাগুলো প্রশাসন ও প্রভাবশালী মহলকে নিয়মিত মাসোয়ারা দেয়। নামসর্বস্ব কিছু গণমাধ্যমকর্মীও নিয়মিত চাঁদা নেন ইটভাটা থেকে। ইটভাটার মালিকরা জানান, এতদিন নিয়মিত চাঁদার বাইরেও স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন দিবস পালনসহ নানা উদ্যোগের জন্য চাঁদা দিতে হয়েছে তাদের। প্রতিবছর ডিসি-ইউএনওরা ইটভাটা মালিক সমিতির মাধ্যমে এলআর ফান্ড ও জাতীয় দিবস পালনের নামে চাঁদা নিয়েছে। তবে এবার রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাধ্যমে প্রশাসন ম্যানেজের চেষ্টা করছেন ইটভাটা মালিকরা।

সরজমিন দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজ প্রকৃতি ছাপিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে যাচ্ছে ইটভাটার চিমনি। আমবাগানের মধ্যেই গড়ে উঠেছে পরিবেশ বিধ্বংসী ইটভাটা। একটা ইটভাটা পেরুলেই চোখে পড়বে আরেকটি ইটভাটা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শেখ হাসিনা সেতুর উপর দাঁড়িয়ে দক্ষিণ দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে প্রায় ১৪টি ইটভাটা থেকে ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনে লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করা যায় না এবং জ্বালানি হিসেবে ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধেরও বিধান রয়েছে। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় নিবন্ধনহীন অবৈধ ইটভাটাগুলো কার্যক্রম শুরু করেছে। এমনকি ইটভাটাগুলো জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করছে।

জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন জানান, জেলায় ১৫৮টি ইটাভাটায় কার্যাক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩টি জিকজ্যাক ও ৯৫টি চলছে খড়ির ভাটা। এই ১৫৮টি ইটভাটা মালিকই সমিতির সদস্য। তার দাবি, ৬৩টি জিকজ্যাক ইটভাটা লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন। অন্যগুলোর ব্যাপারে তিনি অবগত নন।

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ বলেন, আমরা অবৈধ ইটভাটা বিরোধী অভিযান শুরু করেছি। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে আমাদের কার্যক্রম চলমান। হাইকোর্টের নির্দেশনার বিষয়ে অবগত কি-না এমন প্রশ্নে জেলা প্রশাসক বলেন, যেকোনো অবৈধ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আলাদা নির্দেশনার প্রয়োজন পড়ে না, আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।

নবান্ন টিভি/ মোঃ সিফাত রানা

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই রকম আরো কিছু জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2023 nobannotv.com
Design & Development By Hostitbd.Com