বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
রোববার (২০ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
কোনো দেশেই কারাবন্দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠায় না।
বিএনপি হতাশা ব্যক্ত করে বলেছে যে তাদের চেয়ারপারসনের উন্নত চিকিৎসা দরকার।
সে বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এখন খালেদা জিয়াকে কী বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ পাবেন কিনা,
কোনো দেশ বন্দিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠায়, এমন কিছু আপনি জানেন, সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, যদি পাঠিয়ে থাকে, আমাকে জানাবেন। কিন্তু আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।
এখানে দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা তাকে (খালেদা জিয়া) দেয়া হচ্ছে।
ভারতের শিলংয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আছেন। তিনি বাংলাদেশে ফেরত আসতে ট্রাভেল পাস নিয়েছেন।
আমরা যতটুকু জানি, ৯ সেপ্টেম্বর সেটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। তিনি যদি বাংলাদেশে ফেরত না এসে দ্বিতীয় দফায় আর ট্রাভেল পাসের জন্য আবেদন করেন,
সেক্ষেত্রে পাররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফিডব্যাক কী হবে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন,
বাংলাদেশের অভিবাসন আইন যেটা আছে, সেপ্টেম্বরে যে ডেডলাইন পার হয়ে যাবে, তা আমাদের জানা নেই।
পার হয়ে গেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের যে অনুরোধ করবে, সেই অনুসারে কাজ করবো।
ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্দিবিনিময় চুক্তি আছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদ তো অভিযুক্ত,
সেক্ষেত্রে বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত আনা যায় কিনা,
জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন,
এটা টাইম কনজিউমিংয়ের ইস্যু। আর তিনি স্বেচ্ছায় আসতে চেয়েছেন। না আসলে ভবিষ্যতে কী করা যায়, ভেবে দেখবো।
এ সময়ে ব্রিকস প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
ব্রিকসের সার্বিক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, আমরা যদি সদস্য হতে পারি।
তবে সদস্য হওয়ার আগেই তারা এক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করেছেন। ব্রিকসের প্রতিটি কর্মকাণ্ডই বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,
প্রধানমন্ত্রী যখন জোহানেসবার্গে থাকবেন, তখন অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে তার সাক্ষাতের আয়োজন করবো।
এখনও সব চূড়ান্ত হয়নি। এই রাষ্ট্রপ্রধানের সাক্ষাতগুলো শেষ মুহূর্তে হয়। তবে অবশ্যই অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। দ্বিপাক্ষিকভাবে হবে।
আর ব্রিকসে যোগদানে আমাদের সর্বশেষ অবস্থা কি, জানতে চাইলে তিনি বলেন,
আপনারা জানেন, যখন জেনেভাতে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন, তখন দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত তার সঙ্গে দেখা করে তাকে দাওয়াত দেন।
তখন তিনি বলেছিলেন, তারা ব্রিকসের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চান। এখন তারা পাঁচজন, এটা বাড়াতে চান।
বাংলাদেশকেও তাদের সদস্য করার চিন্তাভাবনা করছেন। তবে চূড়ান্ত হয়নি।
এখন শুনতে পেয়েছি, তারা এই মুহূর্তে নতুন সদস্য নেবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
কারণ তারা একটা মোডালিটিজ তৈরি করবেন—কী প্রেক্ষাপটে নেবেন, কী কী হবে…।
এটা কোনো ব্যাপার না। আমরা কোনো তাড়াহুড়ো করবো না।
এরইমধ্যে আমরা ব্রিকস ব্যাংকে যোগদান করেছি। ব্রিকস হ্যাভ অ্যা লার্জ অ্যামাউন্ট—তাদের প্রায় পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে।
এখন যারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার, তাদের অনেকেই ইদানীং খুব একটা সাহায্যে আসছে না।
আর সামনে আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)।
যখন আমরা এসডিজি অ্যাপ্রুভ করি, তখন কথা ছিল,
এসডিজির জন্য প্রতিবছর সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন থেকে এগারো ট্রিলিয়ন পর্যন্ত লাগবে। কিন্তু সেই টাকাটা কেউ দিচ্ছে না।