কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় ৯টি গ্রামের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য দীর্ঘবছরে গড়ে উঠেনি কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জানা যায,উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ১,২,৩ ও ৫ নং ওয়ার্ডে ৯টি গ্রামে ১৩ সহস্রাধিক জনসংখ্যার বসবাস। এসব এলাকার শিশুদের জন্য নেই কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যার কারণে কোমলমতি হাজারো শিশু মৌলিক অধিকার প্রাথমিক শিক্ষার আলো থেকে যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত । এতে অকালে ঝরছে সম্ভাবনাময়ী অসংখ্য শিশুর শিক্ষা জীবন।
ব্যবসায়ী নজরুলের মতে, নব্বইয়ের দশকে ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা ভেবে ২নং ওয়ার্ডের কৈলাশঘোনা গ্রামে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এলাকার কিছু সচেতন ব্যক্তি। ৪/৫ বছর পর পরিচালনার অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়।
বিদ্যালয়ে ঐ সময়কার শিক্ষক শফি ও আমিন এর মতে,নব্বই দশকে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিকে তখনকার অবিভক্ত কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেফায়ত উল্লাহ দু’দফা ভোট কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন। পরে সুষ্ঠু পরিচালনার অভাবে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। ক্রমান্বয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে বর্তমানে বিদ্যালয়ের জায়গাটি ধান ক্ষেত হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
৪নং ওয়ার্ড নাপিতখালী খেলার মাঠ সংলগ্ন স্থানে মধ্য নাপিতখালী আদর্শ(স্বতন্ত্র) ইবতেদায়ী মাদ্রাসা নামে সরকারি তালিকাভুক্ত একটি মাদ্রাসা দীর্ঘবছর যাবত চালু ছিল। সেটিও কতি পয় লোকের বাঁধার মুখে বন্ধের উপক্রম বলে জানান শিক্ষক গিয়াস ।
উক্ত ৪টি ওয়ার্ডের ভৌগোলিক অবস্থান চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের ১ থেকে ৩ কিলোমিটা রের মধ্যে হলেও দুর্ভাগ্যজনক এসব এলাকার জনগণের ভাগ্যে জুটেনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বা অনুদানভুক্ত ইবতেদায়ী মাদ্রাসা।
বিশেষ করে মহাসড়ক অতিক্রম করে অতি দুরত্বের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে গিয়ে শিশুরা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
৫নং ওয়ার্ডের জুমনগরে দুই হাজার সালের দিকে বন বিভাগের জায়গার উপর এনজিও সংস্থা একটি স্যাটেলাইট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিল।পরে প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে সেই সময়কার ইউপি সদস্য আবুল কালামের (পরে সাবেক চেয়ারম্যান) নির্দেশনায় এলাকার লোকজন তা এখনো পর্যন্ত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে চালু রেখেছেন বলে জানালেন সাবেক ইউপি সদস্য আব্দু শুক্কুর।
উপরোক্ত ৪টি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অবিলম্বে এসব এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
ইসলামপুরের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসাইন জানান,শিক্ষা প্রসারের এসময়ে বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না হওয়া দু:খজনক এবং তিনি ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ শুরু করেছেন ।
ঈদগাঁও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতি:দায়িত্ব) জানান,”বিদ্যালয়হীন এলাকায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রকল্প” সরকার পুনরায় চালু করলে এসব এলাকাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
নবান্ন টিভি/ এম আবু হেনা সাগর