জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া সাইবার সিকিউরিটি আইন আগের ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন থেকেও ভয়ংকর ও নির্মম বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবীর রিজভী।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজশাহীর ভুবন মোহন পার্কে ডেঙ্গু প্রতিরোধে লিফলেট বিতরণের আগে সংক্ষিপ্ত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর থাকলো না। এতে সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হতে পারেন।
সরকারের লুটপাট যাতে কোথাও প্রকাশ না হতে পারে, সেজন্য সাইবার নিরাপত্তা আইন তৈরি করা হয়েছে।
সবাই বিরোধিতা করেছেন, সরকার কারো কথা শোনেনি। সাইবার নিরাপত্তা আইন পাস করে জরিমানা আরও বাড়িয়েছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে তিনি বলেন,
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সদস্য না হয়েও দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস ও ভারতে জি-২০ সম্মেলনে গেলেন, ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারণ তার পায়ের নিচে মাটি নেই।’
রিজভীর দাবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ, বিচারক – এদের বড় কর্তারা হয় ছাত্রলীগ, না হয় তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জে।
তিনি পুলিশ ও বিচার বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
বলেন, আজকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শেখ হাসিনা সরকারের সবকিছু প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছে।
আজকে যেকোনো জেলাতে পুলিশ বাহিনীর বড় বড় কর্মকর্তারা ছাত্রলীগ না হয় গোপালগঞ্জে বাড়ি কী করে সম্ভব।
এতদিন মিথ্যা মামলা করেছে। এখন সাজা দেয়ার হিড়িক পড়েছে। রাত ৮টা-১০টা পর্যন্ত সাক্ষী নেয়।
পৃথিবীর কোন সভ্য দেশেই মামলা দিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলন থামানো হয় না। এটা সম্ভব নয়।
ডেঙ্গুর ভয়াবহতা তুলে ধরে রিজভী বলেন,
দেশে ডেঙ্গু প্রকোপের জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাদের মেয়ররা। তাদের উদাসীনতায় মশার প্রকোপ বেড়েছে।
দেশের মানুষ আজকে ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে। ওষুধ নেই, চিকিৎসা নেই। আর সরকার ও তার মেয়ররা পিকনিক করে বেড়াচ্ছেন।
যে সরকারকে জবাবদিহি করতে হয় না, যাদের ভোটের প্রয়োজন হয় না, সেই সরকার জনগণের জীবনের মূল্য দিতে পারে না
। তারা জীবনের মূল্যে দিতে চায় না। এজন্য তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বিএনপির আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয় দাবি করে তিনি বলেন,
‘আমরা জানি এ সরকারকে মানুষ ভোট দিতে চায় না। বিএনপিকে ভোট দেবে সেটাও আমার বলছি না।
তারা যাতে সুষ্টভাবে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন; এজন্যই অন্দোলন করে যাচ্ছি।
মানুষ যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেকারণে আন্দোলন করছে বিএনপি।’
রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম,
জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) অ্যাডভোকেট শাহীন শওকত খালেক, এস এম ওবায়দুর রহমান চন্দন,
রাজশাহী জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, সদস্য সচিব শ্রী বিশ্বনাথ সরকার, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন-অর-রশীদ প্রমুখ।
সভা শেষে নেতারা নগরীর বিভিন্ন সড়কে লিফলেট বিতরণ করেন।