পরিবারকে না জানিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকরা লাইফ সাপোর্টে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন তার ছেলে মাসুদ সাঈদী।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর ভার্চুয়াল দোয়া মাহফিলে এ অভিযোগ করেন তিনি।
মাসুদ সাঈদী আরও বলেন,
২০১৭ সালের ৩ মে তাকে বিএসএমএমইউতে শেষবার চিকিৎসার জন্যে নিয়ে আসা হয়েছিলো।
এই দীর্ঘ সময় তার কোন চিকিৎসা তারা করেননি। অথচ তার হার্টে ৫টি রিং পড়ানো ছিলো।
আমরা বহুবার আবেদন করেছি কিন্তু আমাদের আবেদনে কেউ কর্ণপাত করেননি।
তিনি বলেন,
ঘটনার দিন রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে আমাকে জানানো হয় আব্বা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
তাকে কারাগার থেকে বের করে গাজীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেওয়া হলে আমি সেখানেই সারা রাত ছিলাম।
কিন্তু আমাকে আব্বার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি।
হাসপাতালে থাকা সত্ত্বেও লাইফ সাপোর্টে নেয়ার জন্যে আমাদের জানানো বা অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত ১৪ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সাঈদীর।
তার আরেক ছেলে শামীম সাঈদীর অভিযোগ, তার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গত সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে
বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
২০১০ সালের ২৯ জুন রাজধানীর শাহীনবাগের বাসা থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে
সে সময় জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ওই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন
ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।
পরে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন।
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেন ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর।
সেই রায়ে সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এত দিন ওই সাজা ভোগ করছিলেন তিনি।