২০০৮ থেকে ২০১২- এই চার বছরে দুইবার ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ ও একটি বিশ্বকাপ জিতেছিল স্পেন। গৌরবোজ্জ্বল সেই অধ্যায় থেকে অনেকটা ছিটকে পড়েছিল তারা। সেই স্পেনকে আরেকবার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে চলতি ইউরোতে। উড়তে থাকা লা রোহাদের ডানা কোয়ার্টার ফাইনালে কেটে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জার্মানি। ২০০৮ সালের ফাইনাল হারের প্রতিশোধ নেওয়ারও সুযোগ তাদের সামনে। আজ শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় চলতি ইউরোর সবচেয়ে ‘হাইভোল্টেজ ম্যাচে’ মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল।
এখন পর্যন্ত ইউরোতে চার ম্যাচ খেলে সবগুলো জেতা একমাত্র দল স্পেন। অন্যদিকে এই আসরে ১০ গোল করেছে জার্মানি, যা তাদের টুর্নামেন্ট ইতিহাসে এক আসরে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। তারা অপরাজিত থাকলেও চার ম্যাচে জয় তিনটি।
স্টুটগার্ট এরেনায় দুই ফেভারিটের লড়াইকে ‘ফাইনাল’ মনে করছেন স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। তিনি বলেছেন, ‘প্রথম মিনিট থেকেই আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাদের শক্তিকে সীমিত করে দুর্বলতায় আঘাত করতে চাই। এটা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হতে পারতো। কিন্তু লড়াইটা কোনও অংশে কম হবে না।’
টনি ক্রুস স্পেনের জন্য বড় বাধা হতে পারেন বলে মত কোচের, ‘আমরা ক্রুসের পা দুটো বেঁধে রাখার কথা ভাবছিলাম। কিন্তু উয়েফা আমাকে সেটা করতে দিবে কি না জানি না। আমরা জানি ক্রুস কেমন খেলে। সে যেন বল পায়ে না রাখতে পারে, সেই চেষ্টা আমরা করবো।’
এদিকে জার্মানি কোচ জুলিয়ান ন্যাগেলসম্যান বিশেষ নজর রাখছেন স্পেনের দুই গোলে অ্যাসিস্ট করা টিনএজার লামিনে ইয়ামালের দিকে। এঞ্জো স্কিফো (১৯৮৪) ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর (২০০৪) পর তৃতীয় উইঙ্গার হিসেবে এক আসরে একাধিক অ্যাসিস্ট করেছেন স্পেনের ১৬ বছর বয়সী উইঙ্গার। স্বাগতিকদের বিপক্ষেও তিনি দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন।
অবশ্য ইয়ামাল এই ধরনের বড় ম্যাচে কতটা নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন, সেই ব্যাপারে সন্দিহান জার্মানি কোচ। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি কঠিন হয়ে গেলে সে কেমন করে, সেটা দেখা যাক। তাকে পুরোপুরি আটকাতে পারবেন না আপনি। আপনাকে ভিন্ন কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ইয়ামালের দিকে আমার ফোকাস কিছুটা কম, জামালের (মুসিয়ালা) ওপর বেশি। আমাদের আক্রমণ দিয়েই আমরা কিছু করতে পারি।’
ইয়ামালের দিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে ফ্যাবিয়ান রুইজকে চিন্তার বাইরে রাখলে বিপদে পড়তে পারে জার্মানি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চার ম্যাচে পাঁচ গোলে (তিন গোল, দুই অ্যাসিস্ট) অবদান স্প্যানিশ সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের। ইউরোতে নিজের খেলা তিন ম্যাচের দুটিতেই গোল করেছেন, করিয়েছেন।
কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর প্রথমবার মাঠে মুখোমুখি হচ্ছে জার্মানি ও স্পেন। আর ইউরোতে চতুর্থবার দেখা হচ্ছে তাদের। ২০০৮ সালের ফাইনালের আগে ১৯৮৪ সালে জার্মানদের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পেয়েছিল স্পেন। আর জার্মানি একবারই জিতেছিল, ১৯৮৮ সালে। পরিসংখ্যানে পিছিয়ে থাকলেও কোয়ার্টার ফাইনালে কখনও স্বাগতিকদের ছিটকে না যাওয়ার ইতিহাস এগিয়ে রাখছে তাদের। তাছাড়া ২৬ বারের দেখায় ৯ ম্যাচ জেতার পরিসংখ্যানও তাদের পক্ষে। বিপরীতে ৮টি জিতেছে স্পেন, ড্র ৯টি।