সিজদা মানে প্রণত হওয়া। নামাজের সময় উপুড় হয়ে দুই হাঁটু ও কপাল মাটিতে ঠেকিয়ে নিবেদন করা। দৈনিক পাঁচবারের নামাজে বহুবার সিজদা দিতে হয়। যাঁরা নিয়ম করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, তাঁদের অনেকের কপালে সিজদার কালো দাগ স্থায়ী হয়ে যায়। ওই দাগ পুণ্য ও সম্মানের বলে মনে করা হয়।
সিজদার সম্মান শুধু দুনিয়ায় নয়, আখিরাতেও অনেক বেশি। রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতের পরিণতি নিয়ে তাঁদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর কাছে যে শাফায়াতগুলো চেয়েছিলেন, তা সিজদারত অবস্থাতেই চেয়েছিলেন।
প্রখ্যাত তাবেয়ি আহনাফ ইবনুল কায়েস (রহ.) একদিন ভোরবেলায় মসজিদুল আকসায় প্রবেশ করতে গিয়ে দেখেন, একজন লোক সারা রাত নামাজ পড়েছেন। যত না নামাজ পড়েছেন, তার চেয়ে বেশি সিজদা দিয়েছেন। একেকটি সিজদায় অনেক বেশি সময় নিয়েছেন। এত সময় সিজদায় দেখে মাঝেমধ্যে মনে হতো, তিনি কি সিজদার মধ্যে ইন্তেকাল করেছেন? তখন আহনাফ (রহ.)-এর মনে এই প্রশ্ন এল—এতটা সময় সিজদায় থাকলে কোন রাকাতের সিজদায় আছেন, অনেক সময় তা-ও তো ভুলে যাওয়ার কথা। এসব নানা কথা ভাবতে ভাবতে তিনি সেই সিজদারত লোকটির কাছে গেলেন। এর পরেরবার যখন তাঁর নামাজ শেষ হলো, তখন আহনাফ (রহ.) তাঁকে প্রশ্ন করলেন—‘আপনি যে এত লম্বা সিজদা দিচ্ছেন, এতে রাকাতের হিসাব করতে ভুল হয়ে যায় না?’ সেই লোক উত্তর দিলেন, ‘আমি ভুল করলেও আমার রবের তো কখনো ভুল হয় না। আমি না জানলেও আমার আল্লাহ সব জানেন।’ এরপরই লোকটি বললেন, ‘আমার প্রিয়তম আমাকে বলেছেন…’ এতটুকু বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়লেন। বেশ কিছু সময় পর আবারও বললেন, ‘আমার প্রিয়তম আমাকে বলেছেন…’ আবারও তিনি কথা না বলে কান্না করতে শুরু করলেন।