দান করা গুরুত্বপূর্ণ একটি নেক আমল। কোরআন-হাদিসে এর অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। ইসলামের অপরাপর আমলের মতো এ আমলটির জন্যও রয়েছে কিছু দিকনির্দেশনা। যদি দানের ক্ষেত্রে সেগুলো রক্ষা করা হয়, তাহলে এর যথাযথ প্রতিদান পাওয়া যাবে। দানের সওয়াব বহু গুণে বেড়ে পরকালে আমাদের সামনে উপস্থিত হবে।
নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া
বিশুদ্ধ নিয়ত ছাড়া কোনো আমলেরই আল্লাহর কাছে মূল্য নেই। রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই সব আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যক্তি তাণ্ডই পাবে, যার নিয়ত সে করবে।’ (বোখারি : ১, মুসলিম : ১৯০৭)। দানের ব্যাপারেও একই কথা। দান করতে হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। তবেই তা পরকালে বর্ধিত হয়ে দাতার হাতে ফিরে আসবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ এবং নিজেদের মধ্যে পরিপক্বতা আনার জন্য সম্পদ ব্যয় করে, তাদের দৃষ্টান্ত হলো, কোনো টিলার ওপর একটি বাগান রয়েছে, তার ওপর প্রবল বৃষ্টিপাত হলো, ফলে দ্বিগুণ ফল জন্মাল। যদি তাতে প্রবল বৃষ্টি না-ও পড়ে, তবে হালকা বৃষ্টিও (তার জন্য যথেষ্ট)। তোমরা যা কিছু করো, আল্লাহ তা অতি উত্তমরূপে দেখেন।’ (সুরা বাকারা : ২৬৫)। কিন্তু নিয়ত যদি শুদ্ধ না হয়, তখন হিতে বিপরীতও হতে পারে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন সম্পদশালীকে আল্লাহর সামনে হাজির করা হবে। আল্লাহ তাকে যেসব নেয়ামত দান করেছেন, তার সামনে পেশ করা হবে। দেখে সে চিনে ফেলবে। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, এগুলোতে তুমি কী আমল করেছ? সে বলবে, যেসব খাতে দান করা আপনি পছন্দ করেন, এমন প্রতিটি খাতেই আপনার জন্য খরচ করেছি। তাকে ডেকে বলা হবে, মিথ্যা বলেছ! তুমি খরচ করেছ তোমাকে দানবীর বলার জন্য। তা বলা হয়ে গেছে। অতঃপর তাকে টেনেহিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (মুসলিম : ১৯০৫, মুসনাদে আহমদ : ৮২৭৭)। তাই অল্প হোক বা বেশি, দান হতে হবে আল্লাহর জন্য। বিশুদ্ধ নিয়তে সামান্য দানও যদি করা হয়, সেটি মৃত্যুর পরে কাজে আসবে। এমনকি যদি নিজের হালাল উপার্জন থেকে স্ত্রী ও পরিবারের জন্য খরচ করা হয়, তাও বিফলে যাবে না। বিনিময়ে আল্লাহ সদকার সওয়াব দেবেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যা-ই খরচ করবে, তার প্রতিদান দেওয়া হবে; এমনকি স্ত্রীর মুখে খাবারের লোকমা তুলে দিলেও।’ (মুসলিম : ১৬২৮, সহিহ ইবনে হিব্বান : ৪২৪৯)।
হালাল অর্থ থেকে দান করা
হালাল সম্পদ থেকে দান করতে হয়। অন্যথায় সেই দান কোনো কল্যাণ বয়ে আনে না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মোমিনরা! তোমরা যা কিছু উপার্জন করেছ এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যা কিছু উৎপন্ন করেছি, তার উৎকৃষ্ট জিনিসগুলো থেকে একটি অংশ (আল্লাহর পথে) ব্যয় করো।’ (সুরা বাকারা : ২৬৭)। মোমিন যদি ইখলাসের সঙ্গে হালাল সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে খরচ করে, আল্লাহ নিজ দায়িত্বে সেটির প্রতিদান বাড়িয়ে দেন। কেয়ামতের দিন বান্দার হাতে তা বহু গুণে বাড়িয়ে তুলবেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ দান করল, আল্লাহ তা উত্তমভাবে গ্রহণ করেন। অতঃপর তা লালন-পালন করে বড় করতে থাকেন; যেমন তোমরা ঘোড়ার বাচ্চা লালন-পালন করো; এক পর্যায়ে এ সামান্য দান পাহাড়সম হয়ে যায়।’ (বোখারি : ১৪১০, মুসলিম : ১০১৪)।
পছন্দনীয় জিনিস দান করা
আজ যা দান করা হচ্ছে, পরকালের জন্যই তা আল্লাহর কাছে রেখে দেওয়া হচ্ছে। বীজের জন্য মানুষ ভালো ফসলটাই রেখে দেয়, যাতে নতুন করে বীজ বোনা যায়। কাজেই মোমিনের উচিত, হাতে থাকা সম্পদ থেকে উত্তমটাই আল্লাহর কাছে গচ্ছিত রাখা। নিজের পছন্দের জিনিসটি আল্লাহর পথে খরচ করা। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা কিছুতেই পুণ্য লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় বস্তু থেকে (আল্লাহর জন্য) ব্যয় করো।’ (সুরা আলে ইমরান : ৯২)। রবী ইবনে খুসাইম (রহ.)-এর সম্পর্কে নুসাইর (রহ.) বলেন, কোনো ভিখারি এলে রবী ইবনে খুসাইম (রহ.) বলতেন, ‘তাকে চিনি দাও।’ কারণ রবী চিনি পছন্দ করতেন। (আয যুহদ হান্নাদ ইবনুস সারি : ১/৩৪৪)।
সাধ্য অনুযায়ী অল্প হলেও দান করা
আল্লাহর পথে দান করার জন্য কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ লাগে না। যার যতটুকু আছে, সাধ্যের ভেতর থেকে দান করা চাই। ইখলাসের সঙ্গে হালাল রিজিক থেকে দান করলে সামান্য অর্থও আল্লাহ গ্রহণ করবেন। বিনিময়ে পাহাড়সম নেকি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘খেজুরের এক টুকরো (সদকা করে) হলেও জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা করো।’ (বোখারি : ১৪১৭, মুসলিম : ১০১৬)।
কল্যাণ ও ন্যায়ের পথে দান করা
যে খাতে দান করলে অর্থটা ভালো কাজে খরচ হয়, যার মাধ্যমে ঈমান-আমল বা দ্বীনি বা মানবিক প্রয়োজন পূরণ হয়, সেসব ক্ষেত্রে দান করা চাই। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে একে অন্যকে সহযোগিতা করো।’ (সুরা মায়িদা : ২)। দানের জন্য রয়েছে গরিব-দুঃখী, বিধবা-অসহায়, এতিমণ্ডমিসকিন, মসজিদণ্ডমাদ্রাসা, ওয়াজ মাহফিল বা অন্য যে কোনো দ্বীনি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন দাওয়াতি কার্যক্রম। তা না করে যদি গাঁটের পয়সা খরচ করা হয় (নাচণ্ডগান, আড্ডা, খেল-তামাশা ইত্যাদি) কোনো পাপের পথে, তখন এ দান নিজের কল্যাণ তো দূরের কথা, অনেক ক্ষতি ও দুর্গতি ডেকে আনে। ইবনে হাজার হায়তামি (রহ.) বলেন, ‘কোনো সগিরা গোনাহের পথেও যদি এক টাকা খরচ করা হয়, সেটিও কবিরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।’ (আয যাওয়াজির আন ইকতিরাফিল কাবাইর : ১/৪২১)। তাই আল্লাহতায়ালা নিষেধ করেছেন, ‘তোমরা গোনাহ ও জুলুমের কাজে একে অন্যের সহযোগিতা কোরো না।’ (সুরা মায়িদা : ২)।
ভারসাম্য রক্ষা করে দান করা
ঈমান-আমল থেকে শুরু করে সব কর্ম ও আচরণে ভারসাম্য শেখায় ইসলাম। দানের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে খরচ না করে সব নিজের হাতে কুক্ষিগত করতে যেমন নিষেধ করা হয়েছে, তেমনি নিজের সব অর্থ-সম্পদ বিলিয়ে দিয়ে নিজেকেই অন্যের কাছে হাত পাততে বা পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করতে কষ্ট হয়, এমনটি ইসলাম পছন্দ করে না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘(কৃপণতাবশে) নিজের হাত ঘাড়ের সঙ্গে বেঁধে রেখ না এবং তা সম্পূর্ণরূপে খুলে রেখ না; যার কারণে তোমাকে নিন্দাযোগে ও নিঃস্ব হয়ে বসে পড়তে হয়।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ২৯)। আল্লাহতায়ালা জান্নাতিদের বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘ব্যয় করার সময় যারা অপব্যয় এবং কার্পণ্য করে না; বরং তা হয় ভারসাম্যপূর্ণ।’ (সুরা ফোরকান : ৫৭)। সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)-এর মুমূর্ষু অবস্থায় রাসুল (সা.) তাঁকে দেখতে যান। সাদ (রা.) বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহতায়ালা আমাকে অঢেল ধন-সম্পদ দান করেছেন। আমার সন্তান বলতে মাত্র একটি মেয়ে। আমি চাচ্ছি, আমার সম্পদের তিন ভাগের দুই ভাগ দ্বীনের জন্য খরচ করব।’ রাসুল (সা.) এর অনুমতি দিলেন না। তিনি আরেকটু কম করে বললেন, ‘তাহলে অর্ধেক সম্পত্তি দান করার অসিয়ত করি?’ রাসুল (সা.) এরও অনুমতি দিলেন না। তিনি আরও কম করে বললেন, ‘তাহলে আমার মোট সম্পত্তির তিন ভাগের এক ভাগ দ্বীনের জন্য অসিয়ত করে যাই?’ রাসুল (সা.) এবার কিছুটা সম্মত হলেন। বললেন, ‘আচ্ছা, দিতে পারো; কিন্তু তিন ভাগের এক ভাগও অনেক।’ এরপর বললেন, ‘তুমি তোমার সন্তান-সন্তুতিকে দরিদ্র অবস্থায় রেখে যাবে আর তারা মানুষের কাছে হাত পাতবে, এর চেয়ে অনেক উত্তম হচ্ছে, তাদের সচ্ছল অবস্থায় রেখে যাওয়া।’ (বোখারি : ৪৪০৯)।
গোপনে দান করা বেশি ভালো
চুপি চুপি দান করা চাই, যেন কোনো ধরনের আত্মমুগ্ধতা বা আত্মপ্রচারের শিকার হতে না হয়। ডান হাত দিয়ে দান করলে বাঁ-হাতও যেন টের না পায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সাত ব্যক্তিকে আল্লাহতায়ালা তাঁর ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। তার মধ্যে অন্যতম হলো, যে এমনভাবে দান করে, ডান হাতে দান করলে বাঁ-হাতও টের পায় না।’ (বোখারি : ১৪২৩)। তবে হ্যাঁ, কখনও গোপনে দান করার চেয়ে প্রকাশ্যে দানেও অনেক কল্যাণ থাকে। যেমন- দানের মাধ্যমে অন্যদের উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করা; এটাও যে দানের একটা গুরুত্বপূর্ণ খাত, সেদিকে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। প্রকাশ্যে দান করা মানেই মন্দ নয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান-সদকা করো, তাও ভালো। আর যদি গোপনে গরিবদের দান করো, তবে তা কতই না শ্রেয়।’ (সুরা বাকারা : ২৭১)।
প্রকৃত হকদারকে দান করা
কিছু লোক অর্থ সংকটের শিকার হয়েও ব্যক্তিত্ব, আভিজাত্য ও সামাজিক অবস্থানের কারণে চক্ষুলজ্জায় কারও কাছে চায় না। দান করার সময় খুঁজে খুঁজে এমন লোকদের প্রাধান্য দেওয়া উচিত। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তারা যেহেতু অতি সংযমী হওয়ায় কারও কাছে চায় না, তাই অনবগত লোকে তাদেরকে বিত্তবান মনে করে। তোমরা তাদের চেহারার আলামত দ্বারা তাদের (অভ্যন্তরীণ অবস্থা) জানতে পারবে।’ (সুরা বাকারা : ২৭৩)। রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক-দুই লোকমা খাবার বা এক-দুটি খেজুরের জন্য যে মানুষের দ্বারে দ্বারে ধরনা দেয়, অভাবি তো সে নয়; প্রকৃত অভাবি হলো, যার অভাব আছে; কিন্তু তাকে দেখে তার অভাব আঁচ করা যায় না; যার ভিত্তিতে মানুষ তাকে দান করবে। আবার চক্ষুলজ্জায় সে মানুষের দুয়ারে হাতও পাততে পারে না।’ (বোখারি : ১৪৭৯, মুসলিম : ১০৩৯)।
নিকটবর্তী লোকদের দান করা
নিজের নিকটাত্মীয়দের আগে দান করা চাই। এতে একদিকে যেমন সদকার সওয়াব মেলে, তেমনি আত্মীয়তার হকও আদায় হয়ে যায়। তাই রাসুল (সা.) এর প্রতি উৎসাহিত করেছেন। একে দ্বিগুণ সওয়াব লাভের মাধ্যম বলেছেন। তিনি বলেন, ‘মিসকিনকে দান করলে শুধু দান করার সওয়াব লাভ হয়। আর আত্মীয়স্বজনকে দান করলে দুটি সওয়াব- দান করার সওয়াব এবং আত্মীয়তার হক আদায়ের সওয়াব।’ (তিরমিজি : ৬৫৮, মুসনাদে আহমদ : ১৬২৩৩)। তবে সবসময় অন্য গরিব-দুঃখীদের এড়িয়ে শুধু নিকটজনদের দান করা নয়, কখনও হতে পারে নিকটাত্মীয়ের চেয়ে অন্যদের অভাব ও প্রয়োজনটা বেশি। দান করার সময় তাদের প্রতিও লক্ষ্য রাখা উচিত।
খোঁটা বা অন্য কোনোভাবে কষ্ট দিয়ে দান নষ্ট না করা
দানের পরে খোঁটা দিতে নেই। অন্যথায় সেটি পরকালে দানকারীর জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না। বানে ভেসে যাওয়া খড়-কুটার মতো হারিয়ে যাবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মোমিনরা! খোঁটা ও কষ্ট দিয়ে নিজেদের সদকাকে সেই ব্যক্তির মতো নষ্ট কোরো না, যে মানুষকে দেখানোর জন্য নিজের সম্পদ ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে না। সুতরাং তার দৃষ্টান্ত হলো, মসৃণ পাথরের ওপর মাটি জমে আছে, অতঃপর তাতে প্রবল বৃষ্টি পড়ে (সেই মাটিকে ধুয়ে নিয়ে যায়) এবং (পুনরায়) মসৃণ পাথর বানিয়ে দেয়। এরূপ লোক যা উপার্জন করে, তার কিছুই তারা হস্তগত করতে পারে না।’ (সুরা বাকারা : ২৬৪)।
স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বপ্রণোদিত হয়ে দান করা
সদকা আল্লাহর ক্রোধকে নিভিয়ে দেয়। অপমৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে। তাই শুধু বিপদে নয়, বরং সুখণ্ডদুঃখ, আনন্দ-বেদনা সর্বাবস্থায় দান করা উচিত। আল্লাহতায়ালা মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, ‘যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল (সর্বাবস্থায় আল্লাহর জন্য অর্থ) ব্যয় করে।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৩৪)। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত; এক লোক এসে রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করল, ‘কখন দান করা উত্তম?’ তিনি বললেন, ‘যখন তুমি (অতি প্রয়োজন বা লোভের কারণে) মাত্রাতিরিক্ত মিতব্যয়ী বা হাড়কিপটে হও এবং সম্পদ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশংকা করো অথবা সুস্থ অবস্থায় দীর্ঘায়ুর প্রত্যাশা করো, তখন সদকা করা। এত দেরি কোরো না যে, মৃত্যু এসে পড়ে আর তখন তুমি (অসিয়ত করে) বলছ, আমার সম্পদগুলো অমুকের জন্য, অমুকের জন্য। অথচ (তুমি না বললেও) তা তাদের জন্যই হয়ে আছে।’ (মুসনাদে আহমদ : ৯৭৬৮, সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৭০৬)।
নিজ প্রয়োজনে আপন দায়িত্বে দান করা
দানের মাধ্যমে গ্রহীতার প্রতি অনুগ্রহ করা হচ্ছে, এমন ধারণা করা বোকামি; বরং তার প্রাপ্য ও অধিকারটাই তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যাদের সম্পদে যাঞ্চাকারী ও বঞ্চিতদের নির্ধারিত হক রয়েছে।’ (সুরা মাআরিজ : ২৪-২৫)। কোরআনে কারিমে একে তাদের ‘হক’ বলা হয়েছে। সুতরাং দানকারীর মানসিকতা থাকবে, দান নিজ প্রয়োজনে করলাম। গ্রহীতা তা গ্রহণ করে আমার প্রতি করুণা করল।