রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কোনঠাসা কিয়েভের হাতে আছে অন্যরকম এক ড্রোন, যা দিয়ে সম্প্রতি ঘায়েল করা হয়েছে রুশ নৌবাহিনীর একাধিক জাহাজ।
সামুদ্রিক এই ড্রোন মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে পুতিন বাহিনীর জন্য।
সাগরে ছিটিয়ে রাখা মাইন ধ্বংস করতে,
গোপনে শত্রু পক্ষের অবস্থান শনাক্তে কিংবা জাহাজ বা নৌযানে হামলা চালাতে সক্ষম এই ড্রোন তৈরির খরচ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও কম।
ফলে জেলেনস্কি বাহিনীর কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এটি।
যুদ্ধে জেলেনস্কি বাহিনীর বিরুদ্ধে ইরানি ড্রোন ব্যবহারে এরইমধ্যে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে মস্কো।
পশ্চিমাদের দেয়া প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম অত্যাধুনিক ওই ড্রোনের সহায়তায় যুদ্ধক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি হয়েছে পুতিন বাহিনীর।
পিছিয়ে নেই ইউক্রেনও, আকাশপথে সম্প্রতি রাশিয়ার অভ্যন্তরে এমনকি রাজধানী মস্কো লক্ষ্য করেও ব্যাপক ড্রোনহামলা চালিয়েছে জেলেনস্কি বাহিনী।
তবে সাগরপথে ভ্লাদিমির পুতিনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউক্রেনের সামুদ্রিক ড্রোন।
চলতি মাসের শুরুতে নিজেদের একটি নৌ বাহিনীর ঘাঁটিতে নতুন ধরনের ড্রোনহামলার শিকার হওয়ার কথা জানায় রাশিয়া।
পরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, এ পর্যন্ত ১২ বারের বেশি সমুদ্রে ড্রোনহামলা হয়েছে রুশ নৌবাহিনীর জাহাজ লক্ষ্য করে।
এরপর মস্কো জানায়, ইউক্রেনের উপকূল থেকে ১৯৩ কিলোমিটার দূরে বসফরাস প্রণালীতে সামুদ্রিক এই ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে জেলেনস্কি বাহিনী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হামলা থেকে ধারণা পাওয়া যায় ইউক্রেনের সামুদ্রিক ড্রোন অনেক দূরত্ব অতিক্রম করেও আঘাত হানতে সক্ষম।
ইউক্রেনের এই সামুদ্রিক ড্রোন সাগরে ছিটিয়ে রাখা মাইন ধ্বংস করতে, গোপনে শত্রু পক্ষের অবস্থান শনাক্তে কিংবা জাহাজ বা নৌযানে হামলা চালাতে ব্যবহৃত হয়।
এতে বিশেষ ক্যামেরা থাকে যার সাহায্যে দিন এমনকি রাতের আঁধারেও সবকিছু স্পষ্ট দেখা যায়। অনেক দূর থেকেও এই ড্রোনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
জানা গেছে, সামুদ্রিক এই ড্রোনের প্রতিটির দাম আনুমানিক আড়াই লাখ ডলার বা তার বেশি।
যেকোনো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে যা অনেক কম। এমনকি এই ড্রোন পরিচালনায় বিশেষ প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজন হয় না।
২০২২ সালের অক্টোবরে প্রথম ইউক্রেনের সামুদ্রিক ড্রোনহামলার শিকার হয় রুশ নৌবাহিনী। ওই হামলায় রাশিয়ার তিনটি যুদ্ধ জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।