বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ জনশক্তি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বর্তমানে দেশে নারীদের তুলনায় পুরুষ বেকারের সংখ্যা ১ লাখ ৪৬ হাজার বেশি।
নিউ হ্যাম্পশায়ার ইমপ্লোয়মেন্ট সিকিউরিটির সংজ্ঞা অনুযায়ী, যে ব্যক্তি মাসে ১২ দিন কাজ করেন কিংবা দিনে ১ ঘন্টা কাজ করেন
এবং তার বিনিময়ে অর্থ পান তাকে বেকার হিসেবে গণ্য করা যাবে না।
আর যে কর্মক্ষমতা থাকার পরেও ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় অর্থের বিনিময়ে কাজ করেন না
বা কাজের সংস্থান করতে পারেন না তাকে বেকার বলে অভিহিত করা হয়।
আর একেবারেই কোনো ধরণের কাজের সঙ্গে যুক্ত নেই এমন মানুষের সংখ্যা ২৫ লাখ ৮০ হাজার।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিবিএসের জনশক্তি প্রতিবেদন-২০২২ পর্যালোচনা করে দেখা যায়,
দেশের ২৫ লাখ ৮০ হাজার বেকারের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১০ লাখ ৬৬ হাজার এবং নারী বেকারের সংখ্যা ৯ লাখ ২০ হাজার।
বেকারত্বের সংখ্যার বিচারে নারীরা পুরুষের তুলনায় ভালো অবস্থানে থাকলেও শতাংশের হিসেবে আবার পুরুষের থেকে পিছিয়ে আছেন তারা।
দেশের বর্তমান বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশের মধ্যে পুরুষ বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫ শতাংশ এবং নারী বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, দেশের মোট নারী জনসংখ্যা ৮ কোটি ৪৭ লাখ ৭০ হাজার।
এদের মধ্যে কর্মক্ষম নারীর সংখ্যা ৬ কোটি ২ লাখ ৮০ হাজার।
কর্মক্ষম নারীদের মধ্যে কাজে নিযুক্ত আছেন এমন নারীর সংখ্যা ২ কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার।
শহরের তুলনায় গ্রামের নারীরা গৃহস্থালি কাযকর্মকে নিজদের স্থায়ী কাজ হিসেবে বেশি বেছে নিয়েছেন।
শহরাঞ্চলে গৃহিণীর সংখ্যা ৩ লাখ ২০ হাজার আর গ্রামে গৃহিণীর সংখ্যা ২৭ লাখ ৯০ হাজার।
কানাডাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন হেলথ ব্রিজের এক গবেষণায় দেখা গেছে,
বাংলাদেশের নারীরা নিজেদের ঘরে প্রতিদিন ১৬ ঘন্টায় ৪৫ রকমের কাজ করেন
যা অর্থমূল্যের বিচারে মূল কর্মক্ষম কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হয় না এবং দেয়া হয় না কোনো অর্থমূল্য।
এ দেশের নারীরা সারাদিন যে কাজ করেন তা মাঝারি মানের একজন সরকারি কর্মকর্তার কাজের সমতুল্য বলে গবেষণায় বলা হয়েছে।
নারীদের গৃহস্থালি কাজকে বারবার জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উঠেছে।
অনেক সংগঠন ঘরে থাকা নারীদের গৃহিণী না বলে গৃহ ব্যবস্থাপক পদবি দেয়ার দাবি জানিয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, গৃহস্থালি কাজে সংশ্লিষ্ট নারীদের কাজকে শিগগিরই জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এ ব্যাপারে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে বলেন,
প্রধানমন্ত্রী বহুদিন আগে থেকেই বলছেন, যেসব নারী ঘরে কাজ করেন অর্থাৎ গৃহিণী তাদের কাজকে জিডিপির আওতায় নিয়ে আসা উচিত।
একজন নারী যেমন বাইরে নিজেকে প্রমাণ করে চলছেন, তেমনি নিজ ঘরকেও সামলাচ্ছেন।
নারীর কাজকে শুধু অর্থমূল্যের মাধ্যমে বিবেচনা করা হয় না বলে;
অনেক সময় গৃহিণীরা একটি দেশের অর্থনীতিতে কতটা ভূমিকা রাখে তা অনেকেই জানতে পারেন না।