দেশের মুদ্রাবাজারে কয়েকদিন আগেও ব্যাংকের সঙ্গে খোলাবাজারের ডলারের দামের পার্থক্য ছিল সামান্য।
কিন্তু সম্প্রতি ব্যাংকগুলো চাহিদার বিপরীতে ডলার যোগান দিতে না পারায় খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে আকাশচুম্বী।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১৮ টাকা দরে।
যেখানে গত সপ্তাহে ডলারের দাম ছিল ১১৫ টাকা, তা বেড়ে সোমবার (২৮ আগস্ট) দাঁড়িয়েছিল ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা।
রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, গুলিস্তান ও বিজয়নগরের খোলাবাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকেই বিদেশ যাওয়ার আগে ডলার কিনতে এসে বিপাকে পড়েছেন।
তাদের অভিযোগ, ব্যাংকে গেলে মিলছে না ডলার। মানি এক্সচেঞ্জগুলোও ডলার বিক্রি বন্ধ করেছে। এতে করে বাধ্য হয়ে খোলাবাজার থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে তাদের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি ব্যাংকে নগদ ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা।
বেসরকারি ব্যাংকগুলো ১১১ টাকা ৫০ পয়সা সর্বোচ্চ ধরে ডলার বিক্রি করতে পারবে।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, ডলারের দাম ঠিক করে দেয়া হয়েছে, কিন্তু ব্যাংকে গেলে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না।
চলতি বছর সেপ্টেম্বরে ব্যক্তিগত কাজে যুক্তরাজ্য যাবেন সাকিবুর রহমান।
ডলার কেনার ভোগান্তির কথা জানিয়ে সময় সংবাদকে তিনি বলেন,
শুরুতে ডলার কিনতে ব্যাংকে গিয়েছিলাম। তারা জানাল, ডলারের সংকট থাকায় আপাতত ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে।
এরপর কোনো মানি এক্সচেঞ্জে গিয়েও মেলেনি ডলার। বাধ্য হয়ে খোলাবাজারে ডলার কিনতে হয়েছে।
যেখানে আগে খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হতো ১১৪ টাকায়, সেটি বেড়ে হয়েছে ১১৮ টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি বেসরকারি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সময় সংবাদকে বলেন,
বিগত কয়েক মাস ডলারের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। এতে করে এখন এসে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে প্রয়োজনীয় পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে ডলার সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
আমদানির ক্ষেত্রে বিচার-বিবেচনার ওপর ভিত্তি করে এলসি খোলা হচ্ছে।
কিন্তু যারা নগদে ডলার কিনতে চাচ্ছেন সংকটের কারণে তাদের কাছে ডলার বিক্রি করা যাচ্ছে না বলে জানান এই ব্যাংক কর্মকর্তা।
খোলাবাজারের এক ডলার ব্যবসায়ী বলেন, সংকট চলতে থাকলে সামনে ডলারের দাম আরও বাড়বে।
ডলার কিনতে আসা একজন জানান, ব্যাংকের সঙ্গে খোলাবাজারে ডলারের দামের পার্থক্য থাকলে মানুষ বৈধ পন্থায় ডলার পাঠানোর আগ্রহ হারাবে।
এতে করে হুণ্ডি ব্যবসা আরও প্রকট হয়ে উঠবে।
প্রসঙ্গত, গত বছর জুলাই-আগস্টে খোলাবাজারে সর্বোচ্চ দাম ওঠে ১২১ টাকা।
পরবর্তীতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও
ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠনের (এবিবি) সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দিষ্ট একটি দাম নির্ধারণ করে দেয়।