ঈদগাঁওতে ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি ঘর ইট পাথরের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে কালের বিবর্তনে।
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা এক সময়ে দেখা যেতে মাটির দৃষ্টিনন্দন ঘরবাড়ি। গরম ও শীতে বসবাসে উপযোগী ছিলো এ ঘর। কিন্তু বর্তমানকালে মাটির তৈরি ঘর নির্মাণে কারো কোন তেমন আগ্রহ নেই। ফলে গ্রামীন জনপদে আর তেমন চোখে পড়েনা সেই মাটির তৈরি ঘর। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় দীর্ঘ স্থায়ীভাবে ইট বালি আর সিমেন্টের ব্যবহারে দালানকোঠা-অট্টালিকার কাছে হার মানছে চিরচেনা মাটির ঘর।
ধনী বা মধ্যবিত্ত পরিবারের ততোটা সামর্থ্য না থাকলেও অন্ততপক্ষে টিনের বেড়া আর টিনের চালা দিয়েও বানানো হচ্ছে ঝকঝকে সুন্দর ঘরবাড়ি। আর তাতেই তাদের গৌরব আর শান্তির অবস্থান।
সাধারণত এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড়কুটা অথবা ঢেউটিনের ছাউনি দেয়া হতো। আবার অনেক সময় দোতলা পর্যন্তও করা হতো এই মাটি দিয়ে। মাটির দেয়ালে গৃহিণীরা বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন।
বেশি দিন আগের কথা নয়। উপজেলা সদর ইউনিয়নের ভাদীতলা, মোরাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মাটির ঘর চোখে পড়তো। প্রায় প্রতিটি গ্রামে ছোট ছোট সুন্দর মাটির ঘর সবার নজর কাড়তো। কিন্তু বর্তমানে প্রায় গ্রাম থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার চিরচেনা এ ঘর।
পাড়া মহল্লার কজন প্রবীণ মুরব্বির সাথে কথা হলে তারা জানান, একসময় মাটি, বাঁশ ও টিন সংগ্রহ করে নিজেরাই মাটির ঘর তৈরি করতেন। ঘর তৈরির কারিগরের কাজও করতেন। কিন্তু বর্তমানে এসকল ঘরের চাহিদা না থাকা এবং তুলনামূলক ভাবে খরচ বেশি হওয়ায় ঘর তৈরির কারিগররা অন্য পেশায় লিপ্ত হওয়ায় এখন আর তেমন মাটির ঘরের দেখা মেলেনা।
নবান্ন টিভি/ এম আবু হেনা সাগর