প্রেমের কোনো দেশ-কাল-পাত্র নেই। প্রেমের টানে সমাজ-সংসারের সব প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে প্রেমিক-প্রেমিকার মিলনের গল্প নতুন নয়।
এবার তেমনই এক নজির স্থাপন করলেন নোয়াখালীর আরমান হোসেন ও লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর তরুণী আনা কেলি কারাঞ্জা সাওসিডোর।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় তাদের। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব, প্রেম। তারপর বাংলাদেশ আর পেরুর দূরত্ব ঘুচিয়ে এই যুগল এখন পরিণয়ে আবদ্ধ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) কারাঞ্জা সাওসিডোরকে নোয়াখালীর চাটখিলে নিয়ে আসেন আরমান।
এর আগে গত ২ জুলাই আরমানের টানে পেরু থেকে বাংলাদেশের ছুটে আসেন কারাঞ্জা সাওসিডো। ওইদিনই দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
মো. আরমান হোসেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার হাট-পুকুরিয়া ঘাটলাবাগ ইউনিয়নের ঘাটলাবাগ এলাকার বারাই বাড়ির নুর আলমের ছেলে।
তিনি বাংলাদেশ পুলিশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কনস্টেবল পদে কর্মরত।
জানা যায়,
পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব গড়ায় ভালোবাসার সম্পর্কে। ৬ বছরের ভালোবাসা এবার পূর্ণতা পায় বিয়ের মাধ্যমে।
নোয়াখালীর আরমানের টানে পেরু থেকে গত ২ জুলাই বাংলাদেশের ছুটে আসেন কারাঞ্জা সাওসিডোর।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কারাঞ্জা সাওসিডোরকে রিসিভ করতে ছুটে যান আরমান হোসেন।
ওইদিনই দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিছুদিন ঢাকা অবস্থানের পর বৃহস্পতিবার কারাঞ্জা সাওসিডোকে জন্মস্থান চাটখিলে নিয়ে আসেন আরমান।
বর্তমানে তারা চাটখিল এলাকার বাড়িতেই বসবাস করছেন। সেখানে নববধূকে দেখতে ছুটে আসছেন আশপাশের লোকজন।
আরমান হোসেন বলেন,
আনা কেলি কারাঞ্জা সাওসিডোর সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয় এবং বন্ধুত্ব হয়। ৬ বছর আমাদের মোবাইলেই কথা হয়েছে।
তাকে কখনও সরাসরি দেখার সুযোগ হয়নি। কারাঞ্জা সাওসিডোর এবং আমি দুজনে মিলে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই।
সে অনুযায়ী কারাঞ্জা সাওসিডোর বাংলাদেশ এলে আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই। আমাদের নতুন জীবনের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
কারাঞ্জা সাওসিডোর বলেন,
আমি নিজ ইচ্ছায় আমাদের ভালোবাসার সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে আরমানের কাছে ছুটে এসেছি। আমরা যেন সুখী হতে পারি সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
আরমান হোসেনের প্রতিবেশী বলেন,
আমাদের এলাকায় ভীনদেশি তরুণী আসছে এতে এলাকার সবাই খুশী। আসলে ভালোবাসা সকল অসাধ্যকে সাধ্য করে। আশপাশের মানুষজন প্রতিনিয়ত দেখতে ভিড় জমাচ্ছে।
ভিনদেশি পুত্রবধূ পেয়ে খুশি আরমানের পরিবারও।
আরমানের বাবা নুর আলম বলেন,
আমার ছেলেকে বিয়ে করতে পেরু থেকে তরুণী ছুটে এসেছে। তাদের বিয়ে হয়েছে। গ্রামের বাড়িতে নববধূকে আপ্যায়ন করা হচ্ছে। সে আমাদের আতিথেয়তায় মুগ্ধ।
হাট-পুকুরিয়া ঘাটলাবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাকী বিল্লাহ বলেন,
প্রেমের টানে সুদূর লাতিন আমেরিকা থেকে বাংলাদেশের ছোট্ট একটি গ্রামে এক তরুণীর এভাবে ছুটে আসা সত্যিই বিরল একটি ঘটনা।
শুনেছি তারা বিয়ে করেছেন। দোয়া করি, তারা যেন সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে।