ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়েই চলেছে চট্টগ্রামে। চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭৬ জন।
এদিকে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) স্থান সংকুলান না হওয়ায় মেঝেতেও সেবা দিতে হচ্ছে রোগীদের।
চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট ১৩ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে মারা যান তিনজন।
বাকি ১০ জনের মধ্যে জুনে ছয়জন এবং জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে মৃত্যু হয়েছে চারজনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদের মধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ৩৬ জন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ২৪ জন,
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৬ জন এবং বিআইটিআইডিতে ১৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।
চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ১৩, ১৪, ১৫ ও ১৬ এবং শিশু ওয়ার্ডে পৃথকভাবে ডেঙ্গু রোগীদের রাখা হয়েছে।
তবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালের মেঝেতেও সেবা দিতে হচ্ছে রোগীদের।
তাদের মধ্যে অনেকেই মশারি ছাড়াই থাকছেন। ফলে আক্রান্তদের থেকে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা করছেন অন্য রোগী ও স্বজনরা।
এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে উদ্বেগের কথা জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী
এবং রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালককে (সংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ)
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।
তিনি জানান, চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করে তুলেছি।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় গুরুত্ব দিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে ইতিমধ্যে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে।
এডিস মশা নিধন কার্যক্রম জোরালোভাবে কার্যকর করা না গেলে আগামীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে।
তাই মশক নিধন কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে চট্টগ্রামের মেয়র মহোদয়কে চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরে মশক নিধনে ১০০ দিনের ক্রাশ প্রোগ্রাম নিলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন নগরবাসী।
তবে চসিক মেয়র বলছেন, শুধু ওষুধ ছিটিয়ে মশা নিধন সম্ভব নয়, এ জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।
চসিকের পক্ষ থেকে নগরের সদরঘাটের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে।
সোমবার (১০ জুলাই) থেকে এ কার্যক্রম ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমা না পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চলমান থাকবে।