বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই পার্বত্য জেলাগুলোতে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টিপাতের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
হ্রদের পানি বৃদ্ধির সুফল পেতে শুরু করেছে দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়,
উৎপাদন কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট শুধুমাত্র বর্ষা মৌসুমেই চালু করা সম্ভব হয় যখন হ্রদে সর্বোচ্চ পরিমাণ পানি থাকে।
এই বছর জানুয়ারি মাস থেকেই কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা কমতে থাকে।
এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে তীব্র দাবদাহের কারণে হ্রদের পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়।
ফলে হ্রদের পানির ওপর নির্ভরশীল কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়।
এবারের শুষ্ক মৌসুমে পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে শুধুমাত্র একটি ইউনিট দিয়ে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছিল।
পানির অভাবে বাকি চারটি ইউনিট বন্ধ ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাতে হ্রদের পানির স্তর কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন।
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আবদুজ্জাহের বলেন,
এই বছর পানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।কিন্তু ভালো দিক হলো বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই রাঙামাটিতে ভালো বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
এতে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে আমরা দুটি ইউনিট চালু করতে পেরেছি।
বর্তমানে আমাদের ১ ও ২ নং ইউনিট চালু আছে। দুটি ইউনিট থেকে ৩৫ মেগাওয়াট করে মোট ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়লে হ্রদের পানির স্তর আরও বৃদ্ধি পাবে এবং বন্ধ থাকা ইউনিটগুলোও চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম থেকে জানা যায়,
সোমবার (২৬ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে পানি থাকার কথা ৮২.২২ এমএসএল (মিনস সি লেভেল)।
কিন্তু বর্তমানে হ্রদের পানি আছে ৭৫.২৬ এমএসএল। যা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কম।
প্রসঙ্গত, কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট।
সবগুলো ইউনিট সচল রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ পড়ে প্রতি ইউনিটে ৩০-৪০ পয়সা।
তাই এটিকে দেশের সবচেয়ে স্বল্প মূল্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়।