ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় মানিক গাজী ও আল আমিন নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণের পর বুধবার (১৯ জুলাই) রাতে
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে বনানী থানা পুলিশ।
পুলিশের দাবি,
বিষয়টি নিশ্চিত করে বনানী থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বৃহস্পতিবার বলেন,
হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মানিক ও আল আমিন সরাসরি জড়িত।
হামলার সময় হিরো আলমের কোমর ধরে রেখেছিল মানিক, আর তাকে মারধর করেছেন আল আমিন।
ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় গত মঙ্গলবার সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের মধ্যে ছানোয়ার কাজী ও বিপ্লব হোসেনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালত।
অপর পাঁচ আসামি মাহমুদুল হাসান মেহেদী, মুজাহিদ খান, আশিক সরকার, হৃদয় শেখ ও সোহেল মোল্লাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য,
ঢাকা-১৭ আসনে উপ-নির্বাচনের দিন সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে
মারধরের হাত থেকে বাঁচতে হিরো আলমকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
পরে তিনি রামপুরার বেটার লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করে বনানী থানায় মামলা করেন হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহকারী মো. সুজন রহমান শুভ (২৫)।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়,
সোমবার সকাল থেকে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরুর পর হিরো আলম বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করতে থাকেন।
বিকেল সাড়ে ৩টায় হিরো আলম বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে কেন্দ্র পরিদর্শন করতে যান।
এরপর প্রায় ৪০ মিনিট কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ৫-৬ জন সহযোগীসহ হিরো আলম বের হয়ে আসার সময়
অজ্ঞাত পরিচয়ের ১৫-২০ জন তার গতিরোধ করে বিভিন্ন ধরনের গালিগালাজ করতে থাকে।
এক পর্যায়ে আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে হিরো আলমকে আক্রমণ করে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে।
মারধরের একপর্যায়ে তাদের মধ্যে থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের একজন হত্যার উদ্দেশ্যে হিরো আলমের কলার চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে।
এর মধ্যে আরেকজন এসে হিরো আলমের তলপেটে লাথি মারলে তিনি রাস্তায় পড়ে যান।
মামলার বাদী হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহযোগী সুজন রহমান শুভ এজাহারে আরও অভিযোগ করেন,
হিরো আলম রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পর বাকি আসামিরা তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে
এবং টানাহেঁচড়া করে। এ সময় হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহকারী রাজীব খন্দকার, রনি ও আল আমিন তাকে বাঁচাতে এলে তাদেরও মারপিট করে জখম করে আসামিরা।
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের উপর হামলার ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন,
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা ও বিভিন্ন রাষ্ট্রদূত উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন।