মহাকাশে বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু করেছে ব্রিটিশ বিলিয়নিয়ার স্যার রিচার্ড ব্র্যানসনের মহাকাশ পর্যটন কোম্পানি ভার্জিন গ্যালাক্টিক।
আর এই প্রথম ফ্লাইটে মহাকাশ ভ্রমণ করেছেন এক মা ও তার মেয়ে।
তাদের সঙ্গে ছিলেন আরও একজন। যার মধ্যদিয়ে কার্যত শুরু হলো মহাকাশ পর্যটন।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) স্থানীয় সময় ৮টা ৩০ মিনিটে তিন পর্যটক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য নিউ মেক্সিকোর স্পেসপোর্ট আমেরিকা থেকে উড্ডয়ন করে ভার্জিন গ্যালাক্টিকের মহাকাশযান ভিএমএস ইভ।
এর কিছুক্ষণ পরই যাত্রীদেরকে ৮৫ কিলোমিটার তথা ২ লাখ ৮০ হাজার ফুট উচ্চতায় জিরো গ্রাভিটি বা শূন্য মাধ্যাকর্ষণ উপভোগ করার সুযোগ দেয়া হয়।
বহুল কাঙিক্ষত এই মুহূর্তটি উপভোগ করলেন ১৮ বছর বয়সী অ্যানাস্তাতিয়া মায়ার্স,
তার ৪৬ বছর বয়সী মা কেইশা শাহাফ ও সাবেক অলিম্পিক খেলোয়াড় ৮০ বছর বয়সী জন গুডউইন।
এর মধ্যদিয়ে অ্যাবার্ডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অ্যানাস্তাতিয়া মায়ার্স ও তার মা কেইশা শাহাফ একসঙ্গে মহাকাশে যাওয়া প্রথম পর্যটক হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন।
এছাড়া ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকেও প্রথম মহাকাশযাত্রী তারা।
এই মা ও মেয়ে ক্যারিবীয় দেশ অ্যান্টিগুয়ার অধিবাসী যারা একটি অংশ নিয়ে এই মহাকাশ ভ্রমণের টিকিট জিতেছিলেন।
আর জন গুডউইন যুক্তরাজ্যের স্ট্যাফোর্ডশায়ারের নিউক্যাসল আন্ডার লাইমের অধিবাসী।
তার পারকিনসন রোগ রয়েছে। আর এই রোগ নিয়ে মহাকাশ ভ্রমণ করা দ্বিতীয় ব্যক্তি তিনি।
এখন থেকে প্রায় ১৮ বছর আগে ২০০৫ সালে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার দিয়ে টিকিট কিনেছিলেন তিনি।
মহাকাশে রকেটের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে অ্যানাস্তাসিয়া মায়ার্স।
বিবিসির প্রতিবেদন মতে,
জিরো গ্রাভিটি উপভোগের পর এই তিন মহাকাশযাত্রী তাদের আসনে ফিরে আসে এবং ফিরতি যাত্রার জন্য প্রস্তুত হন।
উড্ডয়নের মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে নিয়ে সফলভাবে স্পেসপোর্ট আমেরিকায় ফিরে আসে ‘ইউনিটি’ রকেট।
দীর্ঘদিন থেকে মহাকাশ পর্যটন প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে ভার্জিন গ্যালাক্টিক।
এর উদ্যোক্তা ও ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসন ছোটবেলা থেকেই মহাকাশযাত্রার স্বপ্ন তার।
সেই স্বপ্ন পূরণে ২০০৪ সালে তিনি নিজস্ব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
বর্তমানে ভার্জিন গ্যালাক্টিকের বয়স ১৯ বছর।
এই সময় প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিক দুর্ঘটনার ধকল ও কারিগরি ত্রুটিজনিত নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে।
২০২১ সালের জুলাই মাসে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়।
ওই বছরের ১১ জুলাই নিউ মেক্সিকোর স্পেসপোর্ট আমেরিকা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ভার্জিন গ্যালাক্টিক স্পেস শাটলে করে মহাকাশ যাত্রা করেন ব্রানসন।
এই ভ্রমণে তার সঙ্গে ছিল আরও তিন মহাকাশযাত্রী।
এরপর এক ঘণ্টার মহাকাশ ভ্রমণ শেষে সফলভাবেই ফিরে আসেন তারা।
এরপরই শুরু হয় বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা।