মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন।
বিএসএমএমইউ পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. রেজাউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
রোববার (১৩আগস্ট) বিকেলে তিনি কাশিমপুর কারাগারে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে
সন্ধ্যায় তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখান থেকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে,
দীর্ঘদিন ধরেই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এ বন্দি ছিলেন।
সেখানে থাকা অবস্থায় রোববার বিকেল ৫টার দিকে তিনি বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পরে তাকে কারাকর্তৃপক্ষ নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন,
ধর্মান্তর করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হলে
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
আপিলের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে ২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদী গ্রেফতার হন।
পরে ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী দল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তীব্র বিরোধিতা করে।
জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে রাজাকার, আলবদর, আল শামস প্রভৃতি বাহিনী গড়ে তোলে।
এরা পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে কাজ করে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে এই দলের সদস্যরা হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, সংখ্যালঘু নির্যাতন,
হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে জোরপূর্বক ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা,
১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যকাণ্ডে জড়িত থাকাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়েছে এবং
এসব অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।