পশ্চিমা বিশ্বের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় দেশগুলোকে নিয়ে বিশ্ব ফ্যাশনের নতুন মেরুকরণ শুরু হয়ে গেছে। নিউইয়র্ক, মিলান ও প্যারিসের মতো শহরগুলোকে বৈশ্বিক ফ্যাশন এর কেন্দ্র হিসেবে মানা হলেও অনেকের হয়ত কল্পনাতেও আসছে না মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমপ্রধান দেশ সৌদি আরবে রাজধানী রিয়াদের নাম।
ওইসব পশ্চিমা শহর ঘিরেই জেঁকে উঠেছে ফ্যাশনের যত আয়োজন। বিশ্বজয়ী ফ্যাশন ডিজাইনার ও লাখো ক্রেতার সঙ্গে সাংবাদিকরাও এখানকার ফ্যাশন উইকের আয়োজনে অংশ নেন।
তবে ব্যতিক্রমী ঘটনার সূত্রপাত ঘটিয়ে এবার ফ্যাশনের কেন্দ্র হিসেবে নাম লেখাতে যাচ্ছে রিয়াদ। সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের নিবন্ধে এমনটি উঠে এসেছে।
পশ্চিম থেকে পূর্বে অর্থাৎ রিয়াদকে ঘিরে ফ্যাশন বাণিজ্যের নতুন ঘাঁটি গড়ে উঠছে। ফ্যাশন পণ্যের রেকর্ড ৪৮ শতাংশ চাহিদা বেড়ে
২০২৫ সাল নাগাদ সৌদি আরব ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলারের ফ্যাশন বাজারে পরিণত হতে পারে বলে আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।
সৌদি আরবের ফ্যাশন ডিজাইনাররা নিজ দেশেই তাদের নৈপুণ্য দেখানোর সুযোগ পাবেন।
গত জুনে প্যারিস ফ্যাশন উইকে ‘১০০ সৌদি ব্র্যান্ড’ প্রদর্শনীর পর সম্প্রতি ফ্যাশন কমিশনের নেওয়া কয়েকটি অন্যতম পদক্ষেপ এটি।
দেশটির লাইফস্টাইল সম্পাদক মারিয়াম মোসাল্লি বলেন, ‘ভোক্তা পর্যায়ে সৌদি নারীদের কাছে সবসময়ই আকর্ষণীয় হচ্ছে হাল আমলের আধুনিক পোশাক।
কাপড় খুঁজে বের করা থেকে স্থানীয় দর্জির সঙ্গে মিলে কাজ করা; নিজেদের চেনাজানার মধ্যেই পণ্য বিক্রি করা
। এ পেশা আমাদের সমাজ ও পরিবেশ উপযোগী হয়ে উঠেছে।’
সাংবাদিক ও সৌদি আরবের যোগাযোগ সংস্থা নিশ এরাবিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মারিয়াম মোসাল্লি আরও বলেন,
‘আজকাল এ চাহিদা বৈশ্বিক হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ই–কমার্সের কারণে অনেক ডিজাইনারের দক্ষতা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাদের ব্যবসা এখন আর শুধু স্থানীয় বাজারে সীমিত নেই।’
ফ্যাশন বাণিজ্যে এই আকর্ষণের কারণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এ খাত অবদান রাখতে পারে বলে সরকার ভাবছে।
ফ্যাশন বাণিজ্য সৌদি আরবের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
এটি দ্রুত বর্ধনশীল হাইড্রোকার্বনহীন খাতগুলোর অন্যতম।
২০২০ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠিত ১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ফ্যাশন কমিশন একটি।
ফ্যাশন খাত সম্প্রসারণে কমিশন বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই কমিশন চলতি বছর মার্চে ‘দ্য স্টেট অব ফ্যাশন ইন দ্য কিংডম অব সৌদি আরব ২০২৩’ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
তাতে সৌদি আরবের ফ্যাশন বাণিজ্য নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
দেশীয় মেধা ব্যবহার উৎপাদন বাড়িয়ে সৌদি আরব আমদানি নির্ভরতা কমাতে চাচ্ছে।
প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ফ্যাশন খাতের সম্ভাব্য ভূমিকার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
সৌদি ফ্যাশন কমিশনের সিইও বুরাক চাকমাক বলছেন, ‘আমরা সৌদি আরবকে ভবিষ্যৎ ফ্যাশনের ভিত্তি হিসেবে তৈরি করছি।’
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সৌদি আরবে ফ্যাশন পণ্যের খুচরা পর্যায়ে বিক্রির চাহিদা ২০২৫ সাল নাগাদ ৪৮ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলার হতে পারে।
এতে সৌদি ফ্যাশন বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বিস্তার লাভ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।