আজ ৬ আগস্ট ১৯৪৫ সালের আজকের এই দিনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একেবারে শেষের দিকে মার্কিন বাহিনী জাপানের হিরোশিমায় ‘লিটল বয়’ নামে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই নারকীয় বোমা হামলায় ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
হিরোশিমায় হামলার ৭৮ বছর পূর্তিতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি স্মরণ করছে জাপান।
রোববার বোমা নিক্ষেপের সময়টিতে স্থানীয় সময় (৮টা ১৫ মিনিটে) হিরোশিমায় শান্তির ঘণ্টা বাজানো হয়।
ভুক্তভোগীদের স্মৃতিচারণামূলক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বোমা বিস্ফোরণের তাণ্ডব থেকে বেঁচে ফেরা লোকও ছিলেন।
পারমাণবিক বোমা হামলার ঠিক সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুইর নেতৃত্বে এক মিনিটের নিরবতা পালন করেন।
পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রহীন বিশ্ব তৈরিতে নেতৃত্ব দেবে জাপান।
হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৮তম বার্ষিকীতে বলেন,
‘বিশ্বব্যাপী নেতাদের অবশ্যই বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে যে, কিছু সুনির্দিষ্ট নীতিনির্ধারকরা নতুন করে পারমাণবিকঅস্ত্র ব্যবহারে হুমকি দিচ্ছে।
পারমাণবিকঅস্ত্র যুদ্ধকে প্রতিহত করে এ ধরনের চিন্তাধারা যে বোকামি তা এসব হুমকির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে।
এদিকে হিরোশিমা দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বার্তায় বলেছেন,
কিছু দেশ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিচ্ছে বলে এখন আবারও যুদ্ধের ছায়া দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পরমাণু যুদ্ধের ঢোল আবারও বাজছে। অবিশ্বাস ও বিভাজন বাড়ছে।
এবং কিছু দেশ আবারও বেপরোয়াভাবে পারমাণবিক স্যাবারকে ধাক্কা দিচ্ছে, এই সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করার হুমকি দিচ্ছে।
এক টুইট বার্তায় গুতেরেস বলেন,
‘৭৮ বছর আগে একটি পারমাণবিক অস্ত্র হিরোশিমাকে পুড়িয়ে দিয়েছিল।
তবুও যারা জায়গাটি পরিদর্শন করেছে তারা জানে, স্মৃতিগুলো কখনই ম্লান হয় না।
হিরোশিমা এবং নাগাসাকির মানুষের সাথে দাঁড়িয়ে এখানে যা ঘটেছিল তার স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং ভবিষ্যতে আরও শান্তিপূর্ণ করতে হলে মানবতাকে অবশ্যই শিক্ষা নিতে হবে।
আমরা এই অপরিহার্য প্রচেষ্টায় জাপানের জনগণের সাথে কাজ করার জন্য উন্মুখ।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট হিরোশিমায় লিটল বয় নামের যে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয় তাতে তাত্ক্ষণিকভাবে মারা যায় হাজার হাজার মানুষ।
এবং বছরের শেষ নাগাদ প্রায় ১ হাজার ৪০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য,
হিরোশিমায় এই জঘন্য কাজ করার পর মার্কিন বাহিনী দ্বিতীয় দফায় আবার পারমাণবিক বোমা হামলা চালায় জাপানের নাগাসাকিতে।
মূলত এই হামলার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের।