পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতাগ্রহণের দুই বছরেও তালেবানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি কোনো দেশ।
ক্ষমতা আসার পর ইসলামিক শরিয়া আইনের দোহাই দিয়ে দেশটিতে নারীদের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছে তারা।
তবে, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার,
দুর্নীতি দমনসহ বিভিন্ন বিষয়ে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান সরকার।
দুই দশকের যুদ্ধ শেষে ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের সেনাদের সরিয়ে নেয়ার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে ক্ষমতা দখল করে সশস্ত্রগোষ্ঠী তালেবান।
এরপর একে একে আসতে থাকে নিষেধাজ্ঞা ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চাপ।
তবে, তালেবান নেতারা প্রাথমিক সেই ধাক্কা সামলেছেন সফলভাবেই।
সমাধান করেছেন গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন দ্বন্দ্ব। এরপর পেরিয়েছে দুই বছর।
বদলেছে আফগানিস্তানের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পেক্ষাপট।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মুদ্রার বিপরীতে সম্প্রতি বেড়েছে আফগানি মুদ্রার মান।
আগের তুলনায় বেড়েছে দেশটির রাজস্ব আয়ের পরিমাণও।
সরকারি কর্মচারীরাও বর্তমানে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন।
দেশটির অভ্যন্তরে তালেবানের শক্তিশালী রাজনৈতিক কিংবা সশস্ত্র কোনো প্রতিপক্ষও নেই।
এছাড়া দেশটিতে দুর্নীতি ও বিভিন্ন সশস্ত্রগোষ্ঠীকে দমন করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে তালেবান।
আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের প্রত্যাশায় অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীন,
কাজাখস্তানসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া ও ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমে আটকে থাকা দেশটির শত শত কোটি ডলার অর্থ ছাড়ে আলোচনা করছে।
কিন্তু এসব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বরাবরই আফগানিস্তানে নারীদের ওপর তালেবানের বিভিন্ন বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।
তালেবান বলছে, তারা আফগানিস্তানে ইসলামী শরিয়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
এ কারণে নারীদের মাধ্যমিকের পর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা ও বাইরে বের হলে যথাযথভাবে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নারী অধিকারের বিষয়টিকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে দরকষাকষির উপায় হিসেবে ব্যবহার করছে তালেবান।
বর্তমান তালেবান সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাদের প্রতি বিভিন্ন দেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন অর্জন করা।
গেল জুনে প্রথমবারের মতো উচ্চপর্যায়ের কোনো আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে আফগানিস্তান সফর করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী।
সম্প্রতি কাতারের দোহায় মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন তালেবান প্রশাসনের কর্মকর্তারা।