অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চলগুলোতে ২০২৬ সালের পর থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে সরকার।
বুধবার (৩০ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সফররত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের নির্বাহীদের সঙ্গে সভাশেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন,
এরই মধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পায়রায় গভীর সমুদ্রে আরও একটি ফ্লোটিং স্টোরেজ রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) করব।
যেটি গ্যাস সরবরাহ করবে। সেখানের পাইপলাইনে ইউএস এক্সিলারেট কোম্পানি বিনিয়োগ করবে।
কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে একটি দল আজ (বুধবার) এসেছিল।
২০২৬ সাল থেকে খুলনা, যশোর ও সিরাজগঞ্জে যে পাইপলাইন যাচ্ছে, সেখানে গ্যাস সরবরাহ করতে রিং বেল্ট তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন,
‘সারা বাংলাদেশে যত অর্থনৈতিক ও শিল্প এলাকা রয়েছে, যত পাওয়ার প্ল্যান্ট আছে, যাতে আগামী ২০২৬ সালের পর থেকে গ্যাসের কোনো সমস্যা দেখা না দেয়,
সেভাবে পরিকল্পনা নিয়ে ইউএস এক্সিলারেট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছি। গভীর সমুদ্র এফএসআরইউ করতে আমরা এই চুক্তি করতে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশের ৭০ শতাংশের মতো বিনিয়োগ মার্কিন কোম্পানিগুলো করছে উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন,
‘আমরা ভবিষ্যতে আরও বেশি প্রত্যাশা করছি। তারাও সেই আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।’
তিনি বলেন,
বিশেষ করে, যারা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগে আমাদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে আছেন, অনেকে নতুন করে অংশীদার হতে চাচ্ছেন।
মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে আমাদের বড় সেমিনার ছিল।
সেখানে আমার প্রেজেনটেশন ছিল। সেখানে আমি দেখিয়েছি, বাংলাদেশে আগামী বছর কী ধরনের বিনিয়োগ আমরা প্রত্যাশা করছি, বিশেষ করে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে প্রায় ৩০ বছর ধরে অংশীদারিত্বে আছেন জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন,
‘১৩ বছর ধরে তারা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সঙ্গে কাজ করছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শেভরন।
আমাদের প্রায় ৬৪ শতাংশ গ্যাস তারা উত্তোলন করছে। আমাদের গ্যাসক্ষেত্র থেকে ঠিকাদার হিসেবে আমাদের গ্যাস সরবরাহ করছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গভীর সমুদ্রবন্দরে গ্যাস সরবরাহে যে টার্মিনাল আছে, সেখানে ইউএস এক্সিলারেট কোম্পানি কাজ করছে।
ভবিষ্যতে আমরা আরও কী ধরনের বিনিয়োগ পেতে পারি, তা নিয়ে মার্কিন-বাংলাদেশ চেম্বার দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সঙ্গে কাজ করছে।’
তারা বাংলাদেশে তাদের কী কী সুযোগ আছে দেখছেন উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন,
‘আমরা তাদের বলেছি, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে আরও প্রায় ৭৫ বিলিয়ন ডলারের মতো বিনিয়োগ আমরা আশা করছি।
বিশেষ করে উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে আমরা এই প্রত্যাশা করছি। কারণ, আমাদের এখন স্মার্ট গ্রিড ইন্টিগ্রেটেড করতে হবে।
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ আমরা কীভাবে দিতে পারি; নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য ভবিষ্যতে যে প্রয়োজন বাড়ছে, সেই বিবেচনায় আমরা বিনিয়োগ অনুসন্ধান করছি।
তিনি বলেন, ‘সেই কারণে তারা আমাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাৎ করতে এসেছেন।
এখানে মূলত শেভরন, এক্সন মোবিল, ইউএস এক্সিলারেট ও ব্ল্যাকরক ছিল। এ ছাড়াও মার্কিন ব্যবসায়িক কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানির লোকজন এতে অংশ নিয়েছেন। তারা উদারভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়।’
তারা বাংলাদেশ সরকারের ওপর খুবই খুশি উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন,
এই সরকারের ওপর আস্থা আছে বলেই ভবিষ্যতে আরও বেশি ব্যবসায়িক সুযোগের খোঁজ করছেন।
আমরাও আশা করছি, মার্কিন কোম্পানিগুলো অনেক বড়, তাদের কাজের মানও ভালো। তারা খুবই স্বচ্ছ।