চীনের অর্থনৈতিক সমস্যাকে টাইম বোমার সঙ্গে তুলনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
দেশটির ভবিষ্যত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং দুর্বল প্রবৃদ্ধি সূচকের প্রেক্ষাপটে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
দ্য নিউইর্য়ক টাইমসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) পার্ক সিটির উইটায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় ফান্ড সংগ্রহের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
উচ্চ বেকারত্ব এবং বার্ধক্যজনিত কর্মশক্তির সঙ্গে ভুগতে থাকা চীনের অর্থনীতিকে তিনি ‘টিকিং টাইম বোমা’র সঙ্গে তুলনা করেন।
এটি অন্যান্য জাতির জন্য হুমকিতে পরিণত হতে পারে বলে মনে করেন বাইডেন। চীনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন,
যখন মন্দ লোকের কোনো সমস্যা হয়, তারা মন্দ কাজই করে।
যেখানে বাইডেন প্রশাসন উভয় দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টায় রয়েছে,
সেখানে তিনি আবারও চীনের সমালোচনা করলেন।
কেননা,
প্রায় সময়ই তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় ফান্ড সংগ্রহের অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন।
এর আগে ক্যালিফোর্নিয়ায় এক তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে একজন ‘স্বৈরশাসক’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন জো বাইডেন।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, তিনি চীনকে আঘাত করতে চান না বরং,
তিনি চীনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি যৌক্তিক সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছেন।
কিন্তু তিনি যে এখনও বেইজিংকে আমেরিকার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই দেখেন, সেই দিকেই ইঙ্গিত করেছেন বাইডেন।
বাইডেন জানান, তিনি চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চান কিন্তু দেশটির সঙ্গে কোনো রকম সংঘাতে জড়াতে চান না।
পাশাপাশি তিনি দক্ষিণ চীন সাগর এবং তাইওয়ানের ভবিষ্যত নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
এদিকে সম্প্রতি শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা চীন সফর করেছেন।
আগামী সপ্তাহে চীনা বাণিজ্য সচিব জিনা রাইমন্ডোর যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অপরদিকে বুধবার (৯ আগস্ট) চীনের সংবেদনশীল উচ্চপ্রযুক্তি শিল্পে নতুন মার্কিন বিনিয়োগের নিষেধাজ্ঞা জারির একটি নির্বাহী আদেশ দেন জো বাইডেন।
এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো, মার্কিন পুঁজি ও দক্ষতা যেন চীনের সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণে ব্যবহৃত না হয়।
সেমিকন্ডাক্টরসহ অন্যান্য মাইক্রোইলেকট্রনিকস,
কোয়ান্টাম কম্পিউটার এবং বেশ কিছু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যাপ্লিকেশন বিকাশের চীনের প্রচেষ্টায় মার্কিন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং
প্রাইভেট ইকুইটি সংস্থাগুলোর বিনিয়োগ রুখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্যই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান দেশটির প্রশাসনিক কর্মকর্তরা।
এক বিবৃতিতে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলেছে,
বাইডেন প্রশাসন আমেরিকাকে নিরাপদ রাখতে এবং সামরিক উদ্ভাবনের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির যথাযথ সুরক্ষার মাধ্যমে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই নির্দেশটি আংশিকভাবে সন্দেহজনক পণ্যের ওপর আরোপ হবে বলে বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের দীর্ঘমেয়াদি উন্মুক্ত বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না।
আংশিকভাবে হোক বা না হোক,
এই নির্দেশটি চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কের সমীকরণকে আরও জটিল করে তুলেছে।
যার প্রতিক্রিয়ায় সম্প্রতি চিপ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে বেইজিং।