কয়েক সপ্তাহ স্থিতিশীল থাকার পর চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ‘সরবরাহ সংকটের’ অজুহাতে ফের বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকার বেশি।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। খুচরা বাজারে আবারও পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকা ছুঁইছুঁই।
একইভাবে দেশীয় পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। এদিকে চিনির দাম কমানো হলেও বাজারে বাস্তবে এর কোনো প্রভাব নেই।
সবজির দাম কিছুটা কমলেও মাছের দাম এখনো ঊর্ধ্বমুখী।
ভোক্তাদের দাবি, প্রশাসন শিগগিরই ব্যবস্থা না নিলে পেঁয়াজের বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশীয় পেঁয়াজ অনেকটা শেষের দিকে।
আর নানা কারণে ভারত থেকে আমদানি পেঁয়াজও আসছে কম। ফলে পেঁয়াজের দাম ফের অস্থির রয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, আসলে পেঁয়াজের আমদানিতে কোনো সরবরাহ সংকট নেই।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক ও আড়তদার সিন্ডিকেট মানুষকে জিম্মি করে মুনাফ লোটার চেষ্টা করছে।
খাতুনগঞ্জে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে প্রতিদিন পেঁয়াজের প্রচুর গাড়ি প্রবেশ করছে।
আড়তেও দেখা মিলছে পেঁয়াজের সারি সারি বস্তা।
তারপরও কিছুদিন পরপর ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়িয়ে চলেছেন।
গতকাল চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বতর্মানে ভালো মানের নাসিক পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়।
একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৩৬-৩৮ টাকায়। এ ছাড়া তুলনামূলক ছোট আকারের পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৭ টাকায়।
সেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ টাকা। ভারত থেকে আমদানি ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা।
আরও একটু নিনমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায়।
এদিকে সরকারিভাবে ভোজ্যতেলের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমানো হলেও চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে এর কোনো প্রভাব নেই।
আগের মতোই অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। আবার কোথাও দাম কমার বদলে আরও বেড়েছে।
সব ধরনের ভোজ্যতেল সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, সরকার দাম বাড়ালে ব্যবসায়ীয়রা মিনিটের মধ্যে কার্যকর করে।
আর দাম কমালে দিনের পর দিনও কার্যকর হয় না। সরকার নির্ধারিত দাম কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে।
বাজারে কার্যকর হয়েছে কিনা তা যাচাই করারও কেউ নেই। সাধারণ মানুষ অসহায় অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে।
অন্যদিকে চালের বাজারও অস্থির। কেজিপ্রতি ৬০ টাকার নিচে কোনো চালও পাওয়া যাচ্ছে না।
খাদ্য অধিদপ্তরের খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) ও ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ডিলারদের মাধ্যমে নিনআয়ের মানুষদের মাঝে কম দামে চাল বিক্রি করেও চালের বাজারকে স্থিতিশীল করতে পারছে না প্রশাসন।
মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের বাজার অস্থির। অনেকদিন ধরেই তেল, চাল ও চিনির বাজার চড়া।
বাজারদর : সবজির বাজারদর আগের মতো থাকলেও মাছের দাম বেশ চড়া।
নগরীর ফিশারি ঘাটে ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের পাইকারি দাম এখন ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা, ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকার মধ্যে।
আর এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা।
অথচ গত বছর এ সময় এ ঘাটে এর অর্ধেক দামে ইলিশ বিক্রি হয়েছিল।
কই ২৫০, লইট্টা ১৮০, কোরাল ৮০০, শিং ৪০০, চিংড়ি ৬৫০, তেলাপিয়া ২২০,
পাঙ্গাশ ১৯০, রুই ২৬০, বড় আকারের কাতল ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৬৫ টাকায় বিক্রি হলেও আজ দাম ঠেকেছে ১৭০ টাকায়।
সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
প্রতিকেজি বেগুন ৫০, ঢেঁড়স ৪০, চিচিঙ্গা ৫০, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটোল ৫০,
করলা ৭০ থেকে ৮০, পেঁপে ৩০ ও কচুমুখি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।