পটুয়াখালীতে পায়রা বন্দরের পাশেই নির্মিত হচ্ছে আরেকটি ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ৭৫ শতাংশ কাজ। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী বছরের জুনেই এটি উৎপাদনে যাবে।
এটি দেশের বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং বিদ্যমান লোডশেডিং কমিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রামনাবাদ নদীর কোলঘেঁষে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঠিক পাশেই নির্মীয়মাণ এ প্রকল্পকে বলা হচ্ছে,
পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বা আরএনপিসিএল।
নয়শ একরেরও বেশি জমিতে চলছে এক মহাকর্মযজ্ঞ,
যেখানে দিনরাত কাজ করছেন সাত হাজারেরও বেশি দেশি ও চীনা শ্রমিক-প্রকৌশলী।
এখানে থাকছে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি।
সর্বাধুনিক এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কয়লা খালাস এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ হবে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব।
এর বাইরে বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি ২২০ মিটার উঁচু চিমনি কয়েক ধাপে ফিল্টারিং করবে এর ধোঁয়া, যা রক্ষা করবে পরিবেশের ভারসাম্য।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.আশরাফ উদ্দিন জানান,
চার বছর ধরে চলা এ কর্মযজ্ঞে এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে প্রকল্পটির তিন-চতুর্থাংশ কাজ।
লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৩০ জুন কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
কেন্দ্রটি চালু হলে দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
চীনের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে এগিয়ে চলা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির কাজ নিয়ে আশাবাদী প্রকল্পটির সমন্বয়কারী মি. মান।
তিনি জানান, ‘বাংলাদেশ সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের কাজ।
এ পর্যন্ত সার্বিক অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।
তিনি জানান, আমদানি করা কয়লা দিয়ে চলবে আরএনপিসিএল।
৬৬০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট মিলে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে প্রতিদিন প্রয়োজন হবে ১২ হাজার মেট্রিক টন কয়লা।
সেই হিসেবে বছরে কয়লা লাগবে ৪০ লাখ মেট্রিক টন।
ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা এ কয়লার চালান আসবে পায়রা বন্দর দিয়ে।
এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট।
এর নির্মাণ কাজ করছেন চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নোরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রুরাল পাওয়ার লিমিটেড।
এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ হাজার কোটি টাকার মতো।