বয়ঃসন্ধিকালে শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটে; এর মধ্যে প্রথমে আসে শারীরিক পরিবর্তন, মানসিক পরিবর্তন এবং এরপর ধাপে ধাপে চলে আসে কৈশোরের সর্বশেষ প্রাপ্তি হিসেবে আসে মাসিক বা ঋতুস্রাব।
সাধারণত ১১ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে ঋতুস্রাব শুরু হয়।
ডিসমেনোরিয়া বা ব্যথামুক্ত ঋতুস্রাব একটি সাধারণ ইস্যু।
ডিস মানে কষ্টকর, মেনো মানে মাসিক, রিয়া মানে প্রবাহ।
– প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া
– সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া
কোনো রোগ ছাড়াই যখন মাসিক কষ্টদায়ক এবং ব্যথাযুক্ত হয় তখন একে বলা হয় প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া।
এটা সাধারণত কৈশোরকালীন সময়ের মধ্যেই বিদ্যমান থাকে।
ঋতুস্রাব শুরুর দুই বছরের মধ্যে এটা দেখা যায়।
ইতিহাস নিলে দেখা যায়, এটার বংশগত ট্রেন্ড আছে।
যেমন—মা, বোন, খালা, এনাদের মধ্যেও একই উপসর্গ থাকে এবং সচ্ছল বা ধনী সমাজের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
ডিসমেনোরিয়ার কারণ কী?
– কৈশোরকালীন টেনশন বা উদ্বেগ
– কৈশোরকালীন সহ্য ক্ষমতা কম থাকে
– অধিক মাত্রায় জরায়ুর ভেতরের অ্যাক্টিভিটি এবং এই স্তরের কার্যগত এবং গঠনগত অসামঞ্জস্যের ফলাফল।
– কিছু হরমোনের আধিক্য যেমন—প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন, যা কি না জরায়ুর মাংশপেশি সংকুচিত করে অক্সিজেন সরবরাহে বাধা প্রদান করে এবং ব্যথার সৃষ্টি করে।
– এর সঙ্গে যোগ হয় ভেসোপ্রেসিন এবং এন্ডোথেলিন নামক আরো দুটি হরমোন।
লক্ষণ
– মাসিক শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে ব্যথা শুরু হয় এবং খুব বেশি হলে ২৪-৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত তীব্রভাবে থাকে।
– খিঁচে ধরা ব্যথা।
– অনেক সময় কোমর, থাই ও পা পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
– এর সঙ্গে থাকে বমি, গা গুলানো ভাব এবং মাথা ব্যথা, ক্ষুধামন্দা, প্রচণ্ড অবসাদ, দুর্বলতা ও ডায়রিয়া।
করণীয়
একজন নারীর অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো মাসিক—প্রকৃতির নিয়মে তার প্রকাশ নারী জীবনকে দেয় পূর্ণতা, ব্যথামুক্ত মাসিক অনেক সময় নারীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা করে ব্যাহত।
– জীবনযাত্রাকে সহজ ও ব্যথামুক্ত করতে কিছু উপায় আছে।
– ঘরোয়া উপায় : তলপেটে গরম সেঁক দেওয়া এবং ম্যাসাজ করা, কুসুম গরম পানিতে গোসল করা। আদা-চা, আদা-কুচি ও গরম পানি খাওয়া।
– ব্যায়াম : হালকা কিছু ব্যায়াম (সাইক্লিং, সাঁতার), শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম
– ওষুধ : পেইন কিলার (এনএসএআইডি-আইবুপ্রোফেন, নেপ্রোক্সেন, ডাইক্লোফেনাক বা মেফিনামিক এসিড) খাওয়া যেতে পারে।
বিবাহিত মেয়েদের জন্য ওরাল পিল বা মুখে খাওয়ার ওষুধ, প্রোজেস্টেরন হরমোন ব্যবহার করা যেতে পারে।
অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
– সার্জারি।