কখনো ভেবেছেন কেন রমজানের সময় খেজুর এত জনপ্রিয় হয়ে উঠে। রমজানের ইফতারে খেজুর খাওয়ার তাৎপর্য জানেন কি?
রোজায় দীর্ঘসময় আমরা খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকি। এতে পুষ্টির অভাবে আমাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই শরীরে দ্রুত এনার্জি ফিরে পেতে অনেকেই ইফতারে খেজুর খান। তবে খেজুর খেলে আপনার শরীরে কি পরিবর্তন হচ্ছে তা অনেকেরই অজানা।
মূলত খেজুর খেয়ে ইফতারের এই রীতি অনেক পুরানো ও এর পেছনে অনেক বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। এছাড়া মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় খাবারের একটি ছিল খেজুর। তিনি নিজেও ইফতার করতেন খেজুর খেয়েই।
খেজুর হল রোজা ভাঙার সর্বোত্তম উপায়। তবে ইফতারে যদি খেজুর না পাওয়া যায়, তাহলে পানি পান করা উচিত। কারণ উভয়ই বিশুদ্ধ এবং নিরাময়কারী।
সারা দিন না খেয়ে থাকার পর আমাদের এমন কিছু খাবারের প্রয়োজন হয়, যা আমাদের শরীরে পুষ্টি জোগাবে। সেই সঙ্গে জোগাবে কর্মশক্তিও। আর এ কারণেই রোজার সময় খেজুরের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে যায়। নানা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খেজুরে আছে ক্যালরি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়ামসহ নানা প্রাকৃতিক উপাদান।
এছাড়া খেজুরে থাকা ক্ষারীয় লবণ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এর পাশাপাশি খেজুর শরীরের নানা রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে।
যকৃতের সংক্রমণে খেজুর উপকারী। এ ছাড়া গলাব্যথা এবং বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি ও ঠান্ডায় বেশ কাজ দেয়। খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে রাতকানা প্রতিরোধেও সহায়ক। এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তাই এই রমজানে খেজুর হোক আপনার নিত্যসঙ্গী।
খেজুর দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ফাইবারের একটি ভাল উৎস এবং এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এছাড়া এটি ভিটামিন এ, বি৬ এবং ফলিক অ্যাসিড এবং পটাসিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো পুষ্টিতে সমৃদ্ধ।
তাই রমজানের সময় প্রতিদিন খেজুর খাওয়া প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় মাল্টিভিটামিনের দৈনিক ডোজ গ্রহণের মতো। খেজুর কার্বোহাইড্রেট বিপাক করতে, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বজায় রাখতে এবং হিমোগ্লোবিন এবং শ্বেত রক্তকণিকা তৈরি করতে সহায়তা করে।
শুকনো ফলের মধ্যে খেজুরে পলিফেনলের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। পলিফেনল শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীর থেকে সমস্ত টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।