মধু অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য। সেই প্রাচীনকাল থেকে খাদ্য ও ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে মধু।
সর্দি-কাশি থেকে বিভিন্ন রোগের সমাধানে মধুর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
কিন্তু জানেন কি ১ কেজি মধু সংগ্রহের জন্য ‘কতটা কাঠখড় পোহাতে হয়’ মৌমাছিদের?
১ কেজি মধুর জন্য কত ফুলে ঢুঁ মারতে হয় মৌমাছিদের?
এর জন্য ঠিক ‘কতটা পথ পেরলে’ তবে ১ কেজি মধু সংগ্রহ হয়?
পতঙ্গবিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, ১ কেজি মধু সংগ্রহ করতে ১১০০ মৌমাছির প্রায় ৯০,০০০ মাইল পথ ঘুরতে হয়,
যা চাদের কক্ষপথের দৈর্ঘ্যের প্রায় তিন গুণ!
ফুলের দিক থেকে হিসাব করলে দেখা যায় ১ কেজি মধু জমা করতে প্রায় ৪০,০০,০০০ ফুলের পরাগরেণু সংগ্রহ করতে হয় কর্মী মৌমাছিদের।
অর্থাৎ, ৫০০ গ্রাম মধুর জন্য ২০ লাখ ফুলের পরাগরেণু লাগে।
সবকিছু ঠিক থাকলে এক মৌসুমে প্রায় ৫৫ কেজি মধু জমা করে কর্মী বা শ্রমিক মৌমাছিরা।
একটি শ্রমিক বা কর্মী মৌমাছি তার সারা জীবনে মাত্র অর্ধেক চা চামচ মধু তৈরি করতে পারে।
একটি মৌচাকে একটি মাত্র রানি মৌমাছি থাকে।
তবে ওই চাকে আরও একাধিক স্ত্রী মৌমাছিকে ‘গোপনে’ লালন করে শ্রমিক বা কর্মী মৌমাছিরা।
যদি কোনো কারণে রানি মৌমাছির মৃত্যু হয়, সে ক্ষেত্রে মৌচাকের পরবর্তী কর্তৃ সুনিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা।
রানি মৌমাছি ছাড়াও চাকের আরও একাধিক স্ত্রী মৌমাছিকে লালন করে শ্রমিক বা কর্মী মৌমাছিরা।
কিন্তু কেন এ ক্ষেত্রে বিশেষ গোপনীয়তা রক্ষা করে চলে শ্রমিক মৌমাছিরা।
একটি রানি মৌমাছিকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে মৌচাক।
যদি কোনো ডিম থেকে স্ত্রী মৌমাছির জন্ম হয়, তাহলে সেটিকে কর্মী মৌমাছিরা লুকিয়ে রাখে।
কারণ, রানি মৌমাছির নজরে পড়লে ওই শিশু স্ত্রী মৌমাছির মৃত্যু নিশ্চিত!
পরে শিশু স্ত্রী মৌমাছিটি বড় হলে তাকে লড়াই করে ওই মৌচাকের কর্তৃত্ব অর্জন করতে হয়।
নয়তো আলাদা হয়ে পৃথক মৌচাক গড়ে তোলে ওই স্ত্রী মৌমাছিটি।
রানি মৌমাছি পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন ১৮-২০টা পুরুষ মৌমাছির সঙ্গে মিলিত হতে পারে! একে বলা হয় ‘দ্য মিটিং ফ্লাইট’।
মিলনের পরেই পুরুষ মৌমাছি মারা যায়। এই জন্যই মৌমাছির মিলনকে ‘দ্য ড্রামাটিক সেক্সুয়াল সুইসাইড’ বলা হয়।