পদ্মা সেতু চালু হওয়ার এক বছরের মধ্যে পাল্টে গেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন শিল্প।
বিগত বছরগুলোতে যাতায়াতের দুর্ভোগের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী ও
পর্যটক সুন্দরবন-কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও বর্তমানে তারা বিনিয়োগ করছেন এবং
প্রতিদিন হাজারো পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত থাকে সাগরকন্যা কুয়াকাটা।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের এক বছরের মধ্যে কুয়াকাটায় নির্মাণ হচ্ছে পাঁচ তারকা মানে বড় বড় হোটেল।
তবে সড়কটি দুই লেন থেকে চার লেনের দাবি আগত পর্যটকদের।
সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা।
একসময়ে ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় সড়কপথে যেতে একাধিক ফেরি পার হতে হতো।
সেসব নদীতে সেতু হয়ে গেছে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল পদ্মা সেতু।
গত বছর ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরে গত এক বছরে এ অঞ্চলের পর্যটনসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।
পদ্মা সেতুর সুফল সবচেয়ে বেশি ভোগ করছে কুয়াকাটাবাসী।
পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়া যাতায়াত করায় এ অঞ্চলের মানুষের আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
পর্যটকরা জানায়, পটুয়াখালীর দর্শনীয় স্থানগুলো বিশেষ করে কুয়াকাটা তার সৌন্দর্যের তুলনায় কিছুটা আড়ালে পড়েছিল।
সহজ যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকাই এর প্রধান অন্তরায় ছিল। এখন সমস্যা কেটে গেছে।
গত এক বছরে কুয়াকাটা সেজেছে নতুন সাজে।
বিগত দিনে অনেক বিনিয়োগকারী কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও
তারা আবার নতুন করে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে কুয়াকাটায়। গড়ে উঠছে পাঁচ তারকা মানে বড় বড় হোটেল।
হোটেল মালিকরা জানায়, আগে এ অঞ্চলে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি ছিল।
পদ্ম সেতু হওয়ার পর পর্যটনশিল্পের পুরো চিত্র পাল্টে গেছে। এখন এ অঞ্চলে বিনিয়োগ করা অত্যন্ত লাভজনক।
ফলে পদ্মা সেতু তাদের জন্য আশীর্বাদ বলে জানালেন কুয়াকাটা হোটেল ব্যবসায়ীরা।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওয়ানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেম শরীফ বলেন,
‘এরিমধ্যে বিনিয়োগকারীরা কুয়াকাটায় বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। গড়ে উঠছে বড় বড় পাঁচ তারকা মানের হোটেল।
এই এক বছরের মধ্যে আমরা পদ্মা সেতুর সুফল পেতে শুরু করেছি।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে পরিবহনের সংখ্যা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
ঢাকা থেকে অল্পসময়ের মধ্যে কুয়াকাটায় যেতে পেরে আনন্দিত পর্যটকরা।
শুধু কুয়াকাটা নয় পদ্মা সেতু পাল্টে দিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোর চিত্র।
তবে ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত প্রায় ২০০ কিমি সড়কটি দুই লেন থাকায় প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
তাই তাদের দাবি সড়কটি দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করা।
পর্যটকরা জানায়, গাড়ি সংখ্যা বেড়েছে, এটা তাদের জন্য আনন্দের বিষয়। তবে সে তুলনায় রাস্তার লেন বাড়ানো হয়নি।
ফলে প্রতিমুহূর্তে দুর্ঘটনার শঙ্কা কাজ করে। এ সড়ক ৪ লেনে উন্নীত করা হলে এ শঙ্কা হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন পর্যটকরা।
পৌর মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর আমরা কুয়াকাটাবাসী বেশি লাভবান হয়েছি।
পদ্মা সেতুর কারণে কুয়াকাটা একদিন আন্তর্জাতিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে।’
কুয়াকাটায় দুই শতাধিক হোটেল মোটেল রয়েছে।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে কুয়াকাটা দুই শতাধিক নতুন এসি পরিবহন কুয়াকাটা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় চলাচল করছে।