বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ নাইকো দুর্নীতি মামলার অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো: আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ আবেদনের আংশিক শুনানি শেষে আগামী ১৪ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো: সারওয়ার হোসেন।
এদিন শুনানির শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল মামলার এজাহার উপস্থাপন করে বলেন,
এই মামলার সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী অসুস্থ এবং আজ কোর্টে আসেননি। তিনি শুনানি করবেন, এজন্য সময় প্রয়োজন।
অপর দিকে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান এর বিরোধীতা করে শুনানি শুরু করেন। তিনি মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ পড়েন।
এরপর আদালত আগামী ১৪ আগস্ট বেলা ১১টা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন,
আমরা মামলার এফআইআর পড়েছি। আজ আংশিক শুনানি হয়েছে। আগামী ১৪ আগস্ট এ মামলার শুনানি হবে।
এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এখানে বেগম খালেদা জিয়ার ওপর অবিচার করা হচ্ছে। যেহেতু রাষ্ট্রক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে নিয়ন্ত্রিত।
উনাকে রাজনৈতিকভাবে কিভাবে নিষ্পেশিত করা যায়, এটা তার একটি দৃষ্টান্ত।
যিনি (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) চুক্তি করেছেন ১৫ হাজার কোটি টাকার, উনার বিরুদ্ধে অভিযোগ। উনি খালাস।
অথচ চুক্তির ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য খালেদা জিয়াকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
অপর দিকে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন,
খালেদা জিয়া দ্বিতীয় বারের মতো হাইকোর্টে এসে চার্জ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করেছেন।
আমরা আদালতে বলেছি, এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। এক নম্বর সাক্ষীর আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন,
এর আগে হাইকোর্টে যখন এ মামলার শুনানি হয় তখন আদালত বলেছেন শেখ হাসিনার কেসটা কী এবং খালেদা জিয়ার কেসটা কী।
এই মামলায় কী হবে না হবে তা সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারিক আদালত নির্ণয় করবে।
এর আগে গত ১৯ মার্চ কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত
এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এরপর ১৭ মে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন-
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন,
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম,
সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক,
বাপেক্সের সাবেক সচিব মো: শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন,
ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এর মধ্যে এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মৃত্যুবরণ করায় তাদের মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম।
২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।