বৃষ্টিসহ বেশকিছু কারণে চলতি মাসে খুলনা-মোংলা রেললাইনে ট্রেন চলাচলের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল তা ক্ষীণ হয়ে গেছে। আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ থাকায় কোনো তাড়াহুড়া না করে ধীরে-সুস্থে লাইনে ট্রেন চালুর ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে জুলাই মাসে ট্রেন চলাচল করা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না।
খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আরিফুজ্জামান বলেন,
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়,
রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার পর ৯১ কিলোমিটারের রেললাইনের ১১টি প্ল্যাটফর্মের কাজও এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।
খুলনা-মোংলা রেললাইনের ৯৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি।
এর আগে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনার অন্যতম মেগা প্রকল্প রূপসা রেলসেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।
প্রকল্প সূত্রে আরও জানা যায়,
২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন করে।
নির্মাণকাজ শুরুর পর কয়েক দফায় এর সময় ও অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হয়।
খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটির কাজ তিনটি ভাগে বিভক্ত। এর একটি রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু, অপরটি রেললাইন এবং অন্যটি টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং সিস্টেম।
প্রকল্পের আওতায় লুপ লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৯১ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ।
রূপসা নদীর ওপরে যুক্ত হচ্ছে ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু। এছাড়া ১০৭টি ছোট ব্রিজ ও ৯টি আন্ডারপাস।
রেলপথের ৯১ কিলোমিটারের মধ্যে ৮১ কিলোমিটার সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১০ কিলোমিটারের কাজ জুলাইয়ের আগে সম্পন্ন হবে।
রেলসেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণকাজ শেষ করেছে।
স্টেশন, রেললাইন স্থাপনসহ বাকি কাজ করেছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
এ রেললাইনের জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন ও রেলসেতু নির্মাণসহ সমগ্র প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এরই মধ্যে পরীক্ষামূলক রেল চলাচল করেছে লাইনে।
রূপসা রেলসেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। মোংলা বন্দর ও মোংলা ইপিজেডে গতি বাড়বে।
মোংলা বন্দরের সঙ্গে খুলনাসহ সারাদেশের রেল যোগাযোগ সুগম হবে। কম খরচে ভারত, নেপাল ও ভুটানে মালামাল পরিবহন সহজ হবে।
বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও সহজে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন।