পাবনা (ঈশ্বরদী): সংসার চলতো চায়ের দোকান চালিয়ে। কিন্তু করোনার মহামারি ঠেকাতে দ্বিতীয় দফার ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে বেচা-বিক্রিসহ কাজ-কর্মও নেই।
ট্রেন চলাচল বন্ধ, দোকানও বন্ধ। চাল কিনবো কী দিয়ে আর বাজারি-বা করবো কী দিয়ে?। অনাহারে দিন কাটছে বর্তমান পরিস্থিতিতে। তার ওপর কেউ খোঁজ নিতে আসেনি, সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতাও করেনি।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল লোক সমাগম শূন্য প্রায় ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের দুই নম্বর প্লার্টফর্মে বসে অসহায় দরিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত কষ্টের কথাগুলো বাংলানিউজকে বলছিলেন চায়ের দোকানি মোহাম্মদ সাঈদ (৫০)। তার বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে।
সাঈদ বাংলানিউজকে বলেন, ঈশ্বরদী পৌর এলাকার নিউ কলোনি এলাকায় আমার বাবার চায়ের দোকান ছিল। হঠাৎ করে বাবা মারা যান। তখন আমি ক্লাস থ্রিতে পড়ি। বাবা মারা যাওয়া সেই ছোট বেলা থেকেই সংসারের হাল ধরতে ঈশ্বরদী স্টেশনে পাঁচ টাকা হাজিরায় পেটে-ভাতে কাজ করেছি। এখনো পরিবার বহুকষ্টে লোকেসেড রেলওয়ের পরিত্যক্ত কোয়ার্টারেই থাকি। আমরা এক ভাই তিন বোন ছিলাম। বহুকষ্টে বোনদের বিয়ে দিয়েছি। সহায় সম্বল বলতে কিছু নেই। স্টেশনের চায়ের দোকান ভাড়া নিয়ে চালাতাম। লকডাউনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার কারণে এখন দোকান বন্ধ। করোনাকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ হওয়ার কারণে ছেলেকে একটি দোকানে কাজে লাগিয়ে দিয়েছি। আর ছোট মেয়ে (১২) পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।
আক্ষেপ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত সাঈদ বলেন, গত বছর ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে চাল-ডাল, তেল, সবজিসহ ঈদের বাজারও পেয়েছিলাম। কিন্তু এবার কোনো স্যার বা কেউ আসেনি। এছাড়া অসহায়, দুস্থদের জন্য সরকারের দেওয়া ত্রাণ সহযোগিতা পাইনি।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েস বাংলানিউজকে বলেন, এখনো ঈশ্বরদী উপজেলায় সরকারি কোনো সহযোগিতা বরাদ্দ আসেনি। বরাদ্দ পেলে স্টেশন এলাকায় বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২১